বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নগুলি

আমি কেন আত্মহত্যা করব না?



প্রশ্ন: আমি কেন আত্মহত্যা করব না?

উত্তর:
আমাদের মন তাদের দিকে ছুটে যায় যারা আত্মহত্যার মাধ্যমে নিজেদের জীবন শেষ করে দিতে চায়৷ যদি এখন তোমার এটা মনে হয়, তবে এটা অনেক আবেগের কথা বলতে পারে, যেমন আশাহীনতা এবং হতাশার অনুভূতি৷ তোমার হয়ত মনে হতে পারে যে তুমি অতল গহ্বরে রয়েছ, এবং তোমার সন্দেহ আছে যে সেখান থেকে উন্নতি হওয়ার কোনো আশা নেই৷ কেউই এটা নিয়ে চিন্তা করে না বা জানে না যে তুমি কোথা থেকে এসেছ৷ জীবন শুধুমাত্র বেঁচে থাকা নয়, নাকি তাই-ই?

এখন যদি তোমার জীবনের কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই তুমি জানতে চাও যে ঈশ্বর আসলেই ঈশ্বর কিনা, তবে তিনি প্রমান করবেন আসলে তিনি কত বড়, “ঈশ্বরের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়” (লিউক 1:37)৷ যদিও পুরনো আঘাতের জন্যই আমরা ঈশ্বরকে মেনে নিতে পারি না৷ আর তা থেকেই জন্মায় নিজের ওপর করুণা, রাগ, তিক্ততা, প্রতিহিংসামূলক চিন্তা অথবা অস্বাভাবিক ভয় যা কিনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলিতে প্রভাব ফেলে৷

তোমার কেন আত্মহত্যা করা উচিত্ নয়? বন্ধু তোমার জীবনে কতটা খারাপ ঘটেছে তা ভেবো না, এমন একজন প্রেমের দেবতা আছেন যিনি তোমাকে হতাশার সুরঙ্গের মধ্যেও আশার পথ দেখিয়ে নিজের আশ্চর্য আলোকে আলোকিত করবেন বলে অপেক্ষা করছেন৷ তিনিই তোমার নিশ্চিত আশা৷ তিনিই হলেন প্রভূ যীশু৷

এই যীশু, ঈশ্বরের নিষ্পাপ পুত্র, তোমার প্রত্যাখ্যান এবং অসম্মানের সময় তোমাকে নিজের সাথে এক মনে করবেন৷ ধর্মপ্রচারক ইশা, ইশা 53:2-6-এ তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন এবং তাঁকে বর্ণনা করেছেন একজন মানুষ হিসেবে যিনি সকলের দ্বারা হতাসাগ্রস্ত এবং প্রত্যাখ্যাত৷ তাঁর জীবন ছিল দুঃখ এবং যন্ত্রণাদায়ক৷ কিন্তু তিনি যে দুঃখ বহন করেছেন তা তাঁর নিজের ছিল না; তা ছিল আমাদের৷ তিনি আমাদের পাপের কারনেই ক্ষতবিক্ষত, আহত এবং বিধ্বস্ত হয়েছিলেন৷ তাঁর এই যন্ত্রণার জন্যই আমাদের জীবন দায়মুক্ত এবং পূর্ণ৷

বন্ধু, প্রভূ যীশু খ্রীষ্ট এসব দৃঢ়ভাবে সহ্য করেছিলেন বলেই হয়ত তোমার সব পাপ ক্ষমা প্রাপ্ত হয়েছে৷ তুমি পাপের যে বোঝা বহন কর, তুমি জান যে তাঁকে নিজের মুক্তিদাতা হিসেবে গ্রহণ করলে তিনি সে পাপ ক্ষমা করবেন৷ “... তোমার বিপদের দিনে আমাকে স্মরণ কর; আমি তোমাকে রক্ষা করব...” (স্লাম 50:15)৷ তুমি এমন কোনো খারাপ কাজ করোনি যা প্রভূ যীশু ক্ষমা করতে পারবেন না৷ তাঁর প্রিয় কিছু শিষ্যরা খুন (মোজেস্), খুন এবং ব্যভিচার (রাজা ডেভিড), এবং শারিরীক ও মানসিক ব্যভিচারের (অ্যাপোস্টল পল্) মত পাপ করেছে৷ তা সত্ত্বেও তারা ক্ষমা লাভ করেছে এবং ঈশ্বরেই পেয়েছে তাদের প্রাচুর্যপূর্ণ জীবন৷ “তাই, যদি কেউ খ্রীষ্টের সঙ্গে নিজের একাত্মীকরণ ঘটায়, তবে সে হল নতুন সৃষ্টি; পুরনো চলে যায়, নতুন আসে!” (2 কোরিন্থিয়ান্‍স্ 5:17)৷

তোমার আত্মহত্যা করা উচিত্ নয় কেন? বন্ধু, যা কিছু “ভগ্ন” তা সব সারিয়ে দেওয়ার জন্য ঈশ্বর রয়েছেন৷ যথা, তুমি এখন যে জীবন কাটাচ্ছো এবং আত্মহত্যার দ্বারা যে জীবন তুমি শেষ করতে চাইছ৷ ইশা 61:1-3-তে, ধর্মপ্রচারক লিখেছেন, “প্রভূ আমাকে হতাশদের সুসংবাদ শোনাতে প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করেছেন৷ আমাকে পাঠিয়েছেন ভাঙা মন জুড়তে, আবদ্ধদের মুক্তি দিতে এবং বন্দীদের অন্ধকার থেকে মুক্তি দিতে, ঈশ্বরের এই সঠিক সময়কে গ্রহণ করতে... যারা মুমূর্ষু তাদের স্বস্তি দিতে, এবং শোকসন্তপ্তদের শান্তি দিতে.... তাদের মাথায় ছাইয়ের পরিবর্তে সৌন্দর্যের মুকুট পরিয়ে দিতে, শোকের বদলে আনন্দের সুগন্ধি দিতে, এবং হতাশাগ্রস্ত আত্মার পরিবর্তে প্রসংশার পোষাক পরিয়ে দিতে৷”

প্রভূ যীশুর কাছে এস, আর তুমি যখন জীবনে নতুন কাজ শুরু করার জন্য তাঁকে বিশ্বাস করেছে তবে তিনিই তোমার শান্তির পুনঃস্থাপনা করবেন৷ তুমি যে আনন্দ হারিয়ে ফেলেছো তা ফিরিয়ে দিতে এবং তোমাকে আত্মার স্থিরতা দিতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ তোমার ভগ্ন হৃদয় তাঁর কাছে মূল্যবান : “ভগ্নহৃদয়ই ঈশ্বরের দান, একটি ভগ্ন এবং অনুতপ্ত হৃদয়, হে প্রভূ, তুমি অবজ্ঞা কোরো না” (স্লাম 51:12, 15-17)৷

তুমি কি প্রভূকে নিজের মুক্তিদাতা ও চালক হিসেবে গ্রহণ করবে? তিনিই তোমার চিন্তা ও পদক্ষেপে তোমায় পথ দেখাবেন – একদিন একই সাথে – বাইবেল, অর্থাৎ তাঁর বাণীর দ্বারা৷ “তোমার যেভাবে চলা উচিত্ আমি সেভাবেই তোমাকে নির্দেশ ও শিক্ষা দেব; আমি তোমাকে বিশ্লেষণ করব এবং তোমার ওপর নজর রাখব” (স্লাম 32:8)৷ “তিনিই তোমার অসময়ের নিশ্চিত ভিত্তি, এবং মুক্তির পথ, এবং পাণ্ডিত্য ও জ্ঞান; ঈশ্বরে ভীতিই এই সম্পদের চাবি” (ইশা 33:6)৷ প্রভূ খ্রীষ্টতে, তোমার এখনও রয়েছে সংগ্রাম, তবে এখন তার সাথে রয়েছে আশা৷ তিনি “তোমার ভাইয়ের চেয়েও কাছের বন্ধু” (প্রোভার্বস্ 18:24)৷ তোমার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় যেন প্রভূ যীশুর আশীর্ব্বাদ তোমার সাথে থাকে৷

তুমি যদি প্রভূ যীশু খ্রীষ্টকে নিজের মুক্তিদাতা হিসেবে বিশ্বাস করতে চাও, তবে মনে মনে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বল : “প্রভূ, আমি আপনাকে আমার জীবনে চাই৷ আমি যা করেছি তার জন্য আমাকে ক্ষমা করুন৷ আমি প্রভূ যীশু খ্রীষ্টতে আমার আস্থা রেখেছি এবং বিশ্বাস করি যে তিনিই আমার মুক্তিদাতা৷ দয়া করে আমায় পবিত্র করুন, শান্তি দিন এবং আমার জীবনে আনন্দ ফিরিয়ে আনুন৷ আমার জন্য আপনার যে ভালোবাসা এবং আমার পাপমুক্তির জন্য প্রভূ যীশুর যে মৃত্যু তার জন্য ধন্যবাদ৷”

যে কারণে আপনি এটি পড়লেন তার ওপর আপনি কি খ্রিষ্টধর্মের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন? যদি তাই হয়, তাহলে অনুগ্রহ করে নিচের বাটনে “আমি আজ খ্রিষ্টধর্মকে গ্রহণ করেছি” এর ওপর ক্লিক করুন।
আমি কেন আত্মহত্যা করব না?    

একবার রক্ষা পাওয়ার অর্থ কি সর্বদা রক্ষা পাওয়া?



প্রশ্ন: একবার রক্ষা পাওয়ার অর্থ কি সর্বদা রক্ষা পাওয়া?

উত্তর:
একবার যদি কোনো ব্যক্তি রক্ষা পায় তাহলে কি সর্বদা রক্ষা পাবে? যখন মানুষ প্রভূ খ্রীষ্টকে নিজেদের মুক্তিদাতা হিসেবে জানতে পারবে, তখন ঈশ্বরের সাথে তাদের যে সম্পর্ক স্থাপিত হবে তার দ্বারা তারা চিরকালের জন্য মুক্তির পথ খুঁজে পাবে৷ ধর্মগ্রন্থের বিভিন্ন পৃষ্টাতে এই ঘটনার ঘোষণা রয়েছে৷ (a) রোমানস 8:30-তে ঘোষণা করা হয়েছে, “এবং যাদের জন্য তিনি আগে থেকেই ভবিষ্যত্ নির্দিষ্ট করে রেখেছেন, তিনিও ডাকবেন; যাদের তিনি ডাকবেন, তিনিও ন্যায্য; যাদের তিনি ন্যায্যতা দেবেন, তিনিও মহিমান্বিত৷” এই পদ্যটি আমাদের জানায় যে যেই মুহূর্ত থেকে ঈশ্বর আমাদের বেছে নেন, সেই মুহূর্ত থেকেই আমরা স্বর্গে তাঁর উপস্থিতিতে মহিমান্বিত হই৷ কোনো কিছুই একজন ঈশ্বর বিশ্বাসীকে মহিমান্বিত হওয়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে না কারন ঈশ্বর আগে থেকেই স্বর্গে সেই ব্যবস্থা করে রেখেছেন৷ যখন কোনো ব্যক্তি ন্যায় করবে তখন তার মুক্তি নির্দিষ্ট – সে স্বর্গে যেমন সুরক্ষিত থাকবে তখনও ততটাই সুরক্ষিত থাকবে৷

(b)পল্ রোমান্ 8:33-34-তে দুইটি সাংঘাতিক প্রশ্ন করেছেন “ঈশ্বর যাদেরকে বেছে নিয়েছেন তার জন্য কাকে মাসুল দিতে হবে? ঈশ্বরই তা স্থির করেছেন৷ কে এই দণ্ডাদেশ জারি করেছেন? যীশু খ্রীষ্ট, যিনি মৃত্যুবরন করেছেন এবং তা থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন – তিনিই ঈশ্বরের সহকারী এবং তিনিই আমাদের জন্য মধ্যস্থতা করেছেন৷” ঈশ্বরের নির্বাচনের জন্য কে মাসুল নির্ধারন করবে? কেউই নয়, কারন খ্রীষ্ট হলেন আমাদের উকিল৷ কে আমাদের জন্য মধ্যস্থতা করবেন? কেউই নয়, কারন যিনি আমাদের জন্য মৃত্যুবরন করেছেন, তিনিই মধ্যস্থতা করবেন৷ আমরা বিচারক এবং উকিল উভয়কেই পেয়েছি আমাদের মুক্তিদাতা হিসেবে৷

(c) বিশ্বাসীরা যখন বিশ্বাস করবে তখন (পুনর্জন্ম) তারা পুনরায় জন্মগ্রহণ করবে (জন্ 3:3; টাইটাস 3:5)৷ একজন খ্রীষ্টানের জন্য তার মুক্তি হারানোর অর্থ হল, তার পুনর্জন্মের অধিকার হারানো৷ বাইবেলে নতুন জন্ম হারানোর কোনো প্রমান নেই৷ (d) পবিত্র আত্মা সকল বিশ্বাসীদের মধ্যে বাস করে (জন্ 1:47; রোমানস 8:9) এবং খ্রীষ্টের দেহেই সকল বিশ্বাসীকে খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত করে (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 12:13)৷ একজন বিশ্বাসী যদি অরক্ষিত হয়, তবে সে হয়ে যাবে “অ-বসবাসকারী” এবং খ্রীষ্টের দেহ থেকে বিচ্যুত৷

(e) জন্ 3:15 বলেছেন যে যারা প্রভূ যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করেন তারা “পাবে শাশ্বত জীবন৷” যদি তুমি প্রভূ খ্রীষ্টকে আজ বিশ্বাস কর তবে শাশ্বত জীবন পাবে, কিন্তু কাল যদি তা হারিয়ে ফেল তবে তা আর কোনোভাবেই “শাশ্বত” থাকবে না৷ তাই যদি তুমি তোমার মুক্তি হারিয়ে ফেল, তবে বাইবেলে শাশ্বত জীবনের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তা ভুল হবে৷ (f) সবচেয়ে চূড়ান্ত যুক্তি হল, আমার মনে হয় ধর্মগ্রন্থ যা বলেছে তাই সর্বশ্রেষ্ঠ, “আমি নিশ্চিত যে জীবন অথবা মৃত্যু, দেবদূত অথবা দৈত্য, বর্তমান অথবা ভবিষ্যৎ, অথবা কোনো শক্তি, উচ্চতা বা গভীরতা, অথবা সৃষ্টির অন্য কোনো কিছুই, প্রভূ যীশু খ্রীষ্টের মধ্যে নিহিত প্রেম থেকে আমাদের বিচ্যুত করতে পারে না” (রোমানস্ 8:38-39)৷ মনে রেখো যে ঈশ্বর তোমাকে রক্ষা করেছেন তিনিই তোমাকে ধারণ করে আছেন৷ আমরা একবার রক্ষা পেলে সর্বদা রক্ষা পাব৷ আমাদের মুক্তি অবশ্যই শাশ্বতভাবে নিরাপদ৷

একবার রক্ষা পাওয়ার অর্থ কি সর্বদা রক্ষা পাওয়া?    

মৃত্যুর পরে কি হয়?



প্রশ্ন: মৃত্যুর পরে কি হয়?

উত্তর:
খ্রীষ্টানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, মৃত্যুর পরে কি পরিণতি হয় তা নিয়ে যথেষ্ট দ্বন্দ্ব আছে৷ কেউ বলেন যে মৃত্যুর পরে শেষ বিচারের আগে পর্যন্ত সকলে “ঘুমায়”, তারপরেই সকলকে হয় স্বর্গে অথবা মর্তে পাঠানো হয়৷ অন্যরা মনে করেন যে মৃত্যুর ঠিক পরেই মানুষের বিচার হয় এবং তাদের শাশ্বত গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়৷ তা সত্ত্বেও অন্যরা দাবী করে যে মানুষ যখন মারা যায়, তাদের আত্মা/প্রেতাত্মাকে সাময়িকভাবে “অস্থায়ী” স্বর্গ বা নরকে পাঠানো হয়, অন্তিম পুনরুত্থান ও অন্তিম বিচারের জন্য, এবং তার পরে তাদের অন্তিম গন্তব্যে পাঠানো হয়৷ তাই, মৃত্যুর পরে কি হয় এই বিষয়ে বাইবেলে ঠিক কি বলা আছে?

প্রথমত, যারা যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করে, বাইবেলে বলা আছে যে মৃত্যুর পরে বিশ্বাসীদের আত্মা স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হয়, কারন তারা প্রভূ যীশুকে নিজেদের মুক্তিদাতা হিসেবে স্বীকার করেছে বলে তাদের পাপ ক্ষমা করা হয় (জন 3:16, 18, 36)৷ বিশ্বাসীদের জন্য, মৃত্যু হল “শরীর থেকে দূরে গিয়ে ঈশ্বরের সাথে তাঁর গৃহে বসবাস” (2 কোরিন্থিয়ান্স 5:6-8; ফিলিপিয়ানস 1:23)৷ যদিও, কোরিন্থিয়ান্‍স 15:50-54 এবং 1 থেসালোনিয়ান্‍স 4:13-17 এই অনুচ্ছেদে বর্ণনা করা হয়েছে যে বিশ্বাসীদের পুনরুত্থান ঘটবে এবং তারা পাবে অমর দেহ৷ যদি বিশ্বাসীরা মৃত্যুর ঠিক পরেই প্রভূ যীশুর সাথে মিলিত হয়, তবে এই পুনরুত্থানের উদ্দেশ্য কি? হয়ত যখন মৃত্যুর ঠিক পরেই বিশ্বাসীদের আত্মা প্রভূ যীশুর সাথে মিলিত হয়, তখনও তাদের নশ্বর দেহ কবরে “ঘুমায়”৷ বিশ্বাসীদের পুনরুত্থানের সময়, নশ্বর দেহ পুনরুত্থিত এবং অমরত্ব প্রাপ্ত হয়, এবং আবার একত্রিত হয় আত্মার সাথে৷ এই একত্রিত এবং অমর দেহ-আত্মা বিশ্বাসীরা অধিকার করে নতুন স্বর্গ এবং নতুন পৃথিবীতে অমরত্বের জন্য (রিভিলেশান 21-22)৷

দ্বিতীয়ত, তাদের জন্য যারা প্রভূ যীশু খ্রীষ্টকে তাদের মুক্তিদাতা হিসেবে স্বীকার করে না, মৃত্যু হল চিরকালীন শাস্তি৷ যদিও, বিশ্বাসীদের মত, অবিশ্বাসীদেরও মৃত্যুর পরে সাময়িকভাবে কোথাও স্থির থাকতে হয়, তাদের চূড়ান্ত বিচার এবং শাশ্বত ভবিষ্যতের জন্য৷ লিউক্ 16:22-23 বর্ণনা করেছে যে একজন ধনী ব্যক্তি মৃত্যুর ঠিক পরেই চূড়ান্তভাবে অত্যাচারিত হয়েছে৷ রিভিলেশান্ 20:11-15 বর্ণনা করছে যে সকল অবিশ্বাসীরাই পুনরুত্থিত হবে, তারপর তাদের বিচার হবে মহান শ্বেত তুলাযন্ত্রে, এবং তারপর তারা নিক্ষিপ্ত হবে আগুনের জলাশয়ে৷ অবিশ্বাসীরা মৃত্যুর ঠিক পরেই নরকে (আগুনের জলাশয়ে) প্রেরিত হবে না, বরং একটি অস্থায়ী অঞ্চলে থাকবে যতক্ষণ না চূড়ান্ত বিচার এবং রায় আসে৷ যদিও, তা সত্ত্বেও অবিশ্বাসীরা তখনই আগুনের জলাশয়ে প্রেরিত হয় না, মৃত্যুর ঠিক পরেই তাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকে না৷ ধনী ব্যক্তি চিৎকার করে বলেছিল৷, “আমি এই আগুনে অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছি” (লিউক 16:24)৷

তাই, মৃত্যুর পরে, একজন মানুষ বাস করে একটি “অস্থায়ী” স্বর্গ বা নরকে৷ এই অস্থায়ী অঞ্চলের পরে, চরম বিচারের সময়, ব্যক্তির শাশ্বত ভাগ্য পরিবর্তিত হয় না৷ শাশ্বত ভবিষ্যতের নির্দিষ্ট “স্থান” যা কিনা পরিবর্তিত হয়৷ বিশ্বাসীরা নতুন স্বর্গ এবং নতুন পৃথিবীতে প্রবেশের অধিকার পায় (রিভিলেশান্ 21:2)৷ অবিশ্বাসীরা আগুনের জলাশয়ে প্রেরিত হয় (রিলিভেশান্ 20:11-15)৷ এইগুলিই হল মানুষের চূড়ান্ত এবং শাশ্বত ভবিষ্যৎ — যা কিনা নির্ভর করে প্রভূ যীশুকে নিজেদের মুক্তির পথ হিসেবে স্বীকার করা বা না করার জন্য (ম্যাথিউ 25:46; জন্ 3:36)৷

মৃত্যুর পরে কি হয়?    

শাশ্বত নিরাপত্তা কি বাইবেল সমর্থিত?



প্রশ্ন: শাশ্বত নিরাপত্তা কি বাইবেল সমর্থিত?

উত্তর:
মানুষ যখন প্রভূ যীশুকে তাদের মুক্তিদাতা হিসেবে জানল তখন তারা তাঁর সাথে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী হল যা তাদের শাশ্বত নিরাপত্তা দেয়৷ জুড 24 ঘোষণা করেন, “তাঁর জন্য যিনি তোমাকে পতন থেকে রক্ষা করবেন এবং তাঁর মহিমান্বিত অস্তিত্বের কাছে নির্দ্বিধায় এবং আনন্দের সাথে তোমাকে উপস্থিত করবেন৷” ঈশ্বরের শক্তি বিশ্বাসীদের পতন থেকে রক্ষা করতে সক্ষম৷ তাঁর মহিমান্বিত অস্তিত্বের সামনে আমাদের উপস্থিত হওয়ার ঘটনা সম্পূর্ণভাবে তাঁর ওপর নির্ভরশীল, আমাদের ওপর নয়৷ আমরা শাশ্বত নিরাপত্তা পেয়ে থাকি কারন ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করেন, কারন আমরা নিজেদের মুক্তির পথ তাঁর করুণা ছাড়া অর্জন করতে পারি না৷

প্রভূ যীশু খ্রীষ্ট দাবী করেন, “আমি তাদের শাশ্বত জীবন দিয়েছি, এবং তাদের তা হারানো উচিত নয়; কেউই আমার হাত থেকে তা ছিনিয়ে নিতে পারবে না৷ আমার পিতা, যিনি আমাকে এই অধিকার দিয়েছেন, তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ, কেউই আমার পিতার হাত থেকে সেই ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতে পারবে না” (জন্ 10:28-29b)৷ যীশু এবং তাঁর পিতা উভয়ই আমাদের শক্ত হাতে আঁকড়ে ধরে আছেন৷ কে আমাদের পিতা এবং প্রভূ যীশু উভয়ের বন্ধন থেকে আলাদা করতে পারে?

এফেসিয়ান্‍স 4:30 বলে যে বিশ্বাসীরা হল “মুক্তির দিনের হুকুমনামা৷” যদি বিশ্বাসীরা তাদের শাশ্বত নিরাপত্তা না পায়, তবে তার কারন মুক্তির দিনের ওপর সঠিকভাবে আস্থাজ্ঞাপন হতে পারে না, বরং শুধু পাপের দিন, স্বধর্ম ত্যাগ এবং অবিশ্বাসের জন্য হতে পারে৷ জন্ 3:15-16 আমাদের বলে যে যারাই যীশু খ্রীষ্টের ওপর আস্থা রাখে তারা “শাশ্বত জীবন পাবে৷” যদি কোনো ব্যক্তি শাশ্বত জীবন পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পায়, কিন্তু তারপর তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তবে তা কোনোভাবেই “শাশ্বত” হতে পারে না৷ যদি শাশ্বত নিরাপত্তা সত্যি না হয়, তবে বাইবেলে বর্ণিত শাশ্বত জীবনের প্রতিশ্রুতি ভুল৷

শাশ্বত নিরাপত্তা বিষয়ক সবচেয়ে শক্তিশালী যুক্তি রয়েছে রোমান্‍স 8:38-39-এ, “আমি দৃঢ়ভাবে জানি যে, জীবন বা মৃত্যু, দেবদূত বা দৈত্য, বর্তমান বা অতীত, কোনো শক্তি, উচ্চতা বা গভীরতা, বা অন্য যে কোনো কিছু আমাদের যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বরের কৃপা পাওয়া থেকে বঞ্চিত করতে পারে না৷” আমাদের শাশ্বত নিরাপত্তা ঈশ্বরের কৃপার ওপর নির্ভরশীল যা তিনি তাঁর কৃপাপ্রার্থীদের দেন৷ আমাদের শাশ্বত নিরাপত্তা যীশুর দ্বারা অধিকৃত, পিতার দ্বারা প্রতিশ্রুত এবং পবিত্র আত্মার দ্বারা নির্দিষ্ট৷

শাশ্বত নিরাপত্তা কি বাইবেল সমর্থিত?    

আত্মহত্যা বিষয়ে খ্রীষ্টানদের মত কি? বাইবেলে আত্মহত্যা বিষয়ে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: আত্মহত্যা বিষয়ে খ্রীষ্টানদের মত কি? বাইবেলে আত্মহত্যা বিষয়ে কি বলা আছে?

উত্তর:
বাইবেলে নির্দিষ্ট ছয় জন ব্যক্তির নাম করা হয়েছে যারা আত্মহত্যা করেছে : অ্যাবিমেলেক (জাজেস 9:54), সল্ (1 স্যামুয়েল 31:4), সলের বর্ম-বহণকারী (1 স্যামুয়েল 31:4-6), আহিথোফেল্ (2 স্যামুয়েল 17:23), জিমরি (1 কিংঙ্গস্ 16:18), এবং জুডাস্ (ম্যাথিউ 27:5)৷ তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল দুর্বৃত্ত এবং পাপী (সলের বর্ম-বহণকারীর বিচার এবং তার চরিত্র সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলা নেই)৷ কেউ কেউ স্যামসনকে আত্মহত্যার উদাহরণস্বরূপ নির্দিষ্ট করতে চায়, কিন্তু স্যামসনের উদ্দেশ্য ছিল ফিলিসটাইনসকে হত্যা করা, নিজেকে হত্যা করা নয়৷ বাইবেল আত্মহত্যাকে খুনের সমান মনে করে, কারন এটি হল – নিজেকে খুন করা৷ ঈশ্বরই একমাত্র যিনি সিদ্ধান্ত নেবেন যে কখন এবং কিভাবে মানুষের মৃত্যু হওয়া উচিত৷

বাইবেল অনুযায়ী, আত্মহত্যা নিশ্চিত করে না যে একজন ব্যক্তি স্বর্গে প্রবেশের অধিকার পাবে কি না৷ যদি কোনো অসংরক্ষিত ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, তবে সে শুধুমাত্র নরকের দিকে নিজের যাত্রা “ত্বরান্বিত” করা ছাড়া আর কিছুই করল না৷ যদিও, যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করল সে প্রভূ খ্রীষ্টকে নিজের মুক্তিদাতা হিসেবে অস্বীকার করেছে বলেই নরকে যাবে, আত্মহত্যা করার জন্য নয়৷ যে খ্রীষ্টান আত্মহত্যা করে তার সম্পর্কে বাইবেলে কি বলা আছে? বাইবেল আমাদের শেখায়, যে মুহূর্ত থেকে আমরা প্রভূ খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করতে শুরু করবো, আমরা শাশ্বত জীবন পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাব (জন্ 3:16)৷ বাইবেল অনুযায়ী, খ্রীষ্টানরা দ্বিধাহীনভাবে জানে যে তারা শাশ্বত জীবনের অধিকারী (1 জন্ 5:13)৷ কোনো কিছুই একজন খ্রীষ্টানকে ঈশ্বরের ভালোবাসা পাওয়ার থেকে বিরত রাখতে পারে না (রোমানস্ 8:38-39)৷ কোনো “ঈশ্বরের সৃষ্টি” খ্রীষ্টানকে ঈশ্বরের ভালোবাসা থেকে দূরে রাখতে না পারে, এবং যে খ্রীষ্টান আত্মহত্যা করে সেও যেহেতু “ঈশ্বরের সৃষ্টি”, তাই আত্মহত্যাও খ্রীষ্টানকে ঈশ্বরের ভালোবাসা পাওয়ার থেকে দূরে রাখতে পারে না৷ যীশু আমাদের পাপের জন্য মৃত্যুবরন করেছেন, এবং যদি একজন আসল খ্রীষ্টান, আধ্যাত্মিক আক্রমণ এবং দুর্বলতার সময়, আত্মহত্যা করে, তাহলে সেই পাপও ঈশ্বরের রক্তের দ্বারা ধুয়ে যাবে৷

আত্মহত্যা হল ঈশ্বরের বিরুদ্ধে একটি ভয়ানক পাপ৷ বাইবেল অনুযায়ী, আত্মহত্যা হল খুন; এইটি সবসময়েই ভুল৷ কোনো ব্যক্তি যদি নিজেকে খ্রীষ্টান বলে দাবি করা সত্ত্বেও আত্মহত্যা করে তবে তার বিশ্বাসের উত্কর্ষতা সম্পর্কে সন্দেহ জাগবে৷ এমন কোনো পরিস্থিতি নেই যা বিশেষভাবে একজন খ্রীষ্টানকে নিজের জীবন নেওয়াকে ন্যায় বলে স্বীকার করবে৷ খ্রীষ্টানরা সৃষ্টি হয়েছে ঈশ্বরের জন্য নিজেদের জীবন অতিবাহিত করতে, এবং মৃত্যু কখন হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার এক এবং একমাত্র ঈশ্বরেরই আছে৷ যদিও এখানে আত্মহত্যাকে বর্ণনা করা হয়নি, তবুও 1 কোরিন্থিয়ানস্ 3:15-এ বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যে একজন খ্রীষ্টান যদি আত্মহত্যা করে তার সাথে কি হবে সেই বিষয়ে : “সে নিজে সুরক্ষিত থাকবে, কিন্তু শুধুমাত্র সেই হিসেবে যে আগুনের শিখা থেকে পালিয়ে গেছে৷”

আত্মহত্যা বিষয়ে খ্রীষ্টানদের মত কি? বাইবেলে আত্মহত্যা বিষয়ে কি বলা আছে?    

খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষাদানের উৎসবের গুরুত্ব কি?



প্রশ্ন: খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষাদানের উৎসবের গুরুত্ব কি?

উত্তর:
খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষাদান হল, বাইবেল অনুযায়ী, একজন বিশ্বাসীর জীবনে যা তার অন্তরে শুরু থেকেই থাকে তারই বাহ্যিক অনুষ্ঠান৷ খ্রীষ্টানদের দীক্ষাদানের উৎসবের মাধ্যমে একজন বিশ্বাসী প্রভূ যীশুর মৃত্যু, তাঁকে কবর দেওয়া এবং তাঁর পুনরুত্থান এই সকল ঘটনার সঙ্গে পরিচিত হতে পারে৷ বাইবেলে ঘোষণা করা হয়েছে, “অথবা তুমি কি জান না যে প্রভূ যীশু মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন তাই আমরা খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছি? আমাদের তাই জন্য এই প্রথার মাধ্যমে যীশুর সাথে কবর দেওয়া হয়, এবং যেভাবে প্রভূ যীশু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন পিতার করুণার মাধ্যমে, তেমনই আমরাও হয়ত নতুন জীবন পেতে পারি” (রোমান্‍স 6:3-4)৷ খ্রীষ্টান ধর্মের দীক্ষাদানের উৎসবে, যেভাবে জলে নিমজ্জিত করা হয় তার অর্থ হল মৃত্যুলাভ এবং তা থেকে প্রভূ খ্রীষ্টের সাথে পুনরুত্থান৷ জল থেকে বেরিয়ে আসার ক্রিয়াটি হল প্রভূ খ্রীষ্টের মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান৷

খ্রীষ্টানদের দীক্ষাদানের উৎসবে, এই অনুষ্ঠানের পূর্বে মূলতঃ দুইটি বিষয় থাকা প্রয়োজনীয় : 1) যে ব্যক্তিকে দীক্ষা দেওয়া হবে তাকে অবশ্যই নিজের মুক্তিদাতা হিসেবে প্রভূ যীশুকে বিশ্বাস করতে হবে, এবং 2) সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই এই দীক্ষার মাহাত্ম্য বুঝতে হবে৷ যদি কোনো ব্যক্তি প্রভূ যীশুকে নিজের মুক্তিদাতা হিসেবে স্বীকার করে, যদি বুঝতে পারে যে খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষা নেওয়া হল সেই পদক্ষেপ যার মাধ্যমে সকলের সামনে প্রভূ যীশুর ওপর আস্থার দাবি করা হয়, এবং দীক্ষা নেওয়ার জন্য ইচ্ছুক হয়, তবে তাকে এই দীক্ষা নেওয়া থেকে বিরত করার কোনো কারন নেই৷ বাইবেল অনুযায়ী, খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষাগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ কারন এটি হল অনুগত হওয়ার পদক্ষেপ — সকলের সামনে প্রভূ যীশুর ওপর আস্থা এবং তাঁর ওপর নিজের সমস্ত ভার অর্পণ করা — প্রভূ যীশুর মৃত্যু, তাঁকে কবর দেওয়া এবং তাঁর পুনরুত্থানের সাথে নিজেকে শনাক্ত করা৷

খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষাদানের উৎসবের গুরুত্ব কি?    

বাইবেলে ঈশ্বরের ত্রয়ী রূপ সম্পর্কে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: বাইবেলে ঈশ্বরের ত্রয়ী রূপ সম্পর্কে কি বলা আছে?

উত্তর:
ঈশ্বরের এই ত্রয়ী রূপ সম্পর্কে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হল যে এই ধারণাকে বর্ণনা করার কোনো সহজ পথ নেই৷ ঈশ্বরের এই ত্রয়ী রূপের ধারণা্ কোনো মানুষের পক্ষে একা বর্ণনা করা বা বোঝা একেবারেই সম্ভব নয়৷ ঈশ্বর সীমাহীনভাবে আমাদের চেয়ে মহান; তাই, আমারা তাঁকে সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারব তা ভাবা উচিত নয়৷ বাইবেলে বলা আছে যে পিতাই হলেন ঈশ্বর, প্রভূ যীশু হলেন ঈশ্বর, এবং পবিত্র আত্মাই হলেন ঈশ্বর৷ আবার বাইবেলে এও বলা আছে যে ঈশ্বর এক এবং অনন্য৷ যদিও আমরা এই ত্রয়ীর মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা বুঝতে পারি তবুও তা সম্পূর্ণভাবে বোঝা মানুষের পক্ষে সাধ্যাতীত৷ তবে, এর অর্থ এই নয় যে ঈশ্বরের এই ত্রয়ী রূপ আসল নয় অথবা এই ধারণা বাইবেলের শিক্ষার ওপর নির্ভরশীলও নয়৷

এই ত্রয়ী রূপ হল এক ঈশ্বরের মধ্যে তিনের সমাহার৷ তবে এর অর্থ এই নয় যে এখানে তিনজন ঈশ্বরের কথা বলা হয়েছে৷ এই বিষয়ে আলোচনা করার সময় মনে রাখতে হবে যে “ত্রয়ী” এই শব্দটি ধর্মগ্রন্থে উপস্থিত নেই৷ এই শব্দটি ঈশ্বরের ত্রয়ীকে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়েছে – তিনের একত্র অস্তিত্ব, এক-শাশ্বত ব্যক্তি যিনি ঈশ্বরকে সৃষ্টি করেছেন৷ “ত্রয়ী” এই শব্দটির যা ধর্মগ্রন্থে ব্যবহৃত হয়েছে তার দ্বারা যে অস্তিত্বের কথা বলা হয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ঈশ্বরের বাণীতে ত্রয়ী সম্পর্কে যা বলা আছে তা নিম্নে দেওয়া হল :

1) ঈশ্বর এক এবং অনন্য (ডিউটারোনমি 6:4; 1 কোরিন্থিয়ানস 8:4; গ্যালাটিয়ানস 3:20; 1 টিমোথি 2:5)৷

2) এই ত্রয়ীতে রয়েছে তিনের সমন্বয় (জেনেসিস্ 1:1, 26; 3:22; 11:7; ঈশা 6:8, 48:16, 61:1; ম্যাথিউ 3:16-17, 28:19; 2 কোরিন্থিয়ানস 13:14)৷ জেনেসিস্ 1:1-এ, হিব্রু বহুবচন বিশেষ্য ইলোহিম ব্যবহৃত হয়েছে৷ জেনেসিস্ 1:26, 3:22, 11:7 এবং ইশা 6:8 এই উভয় ক্ষেত্রেই বহুবচন সর্বনাম “আমাদের” ব্যবহৃত হয়েছে৷ ইলোহিম এবং সর্বনাম “আমাদের” দুটি শব্দই বহুবচনে ব্যবহৃত হয়েছে, যা হিব্রু ভাষায় অবশ্যই দুই-এর বেশি ব্যক্তির জন্য ব্যবহৃত হয়৷ যদিও এই যুক্তি থেকেই ত্রয়ী সম্পর্কে বিশদ জানা যায় না, তবে এই শব্দটি অবশ্যই ঈশ্বরের বহুত্বের প্রমান দেয়৷ ঈশ্বরের জন্য ব্যবহৃত হিব্রু শব্দ ইলোহিম, অবশ্যই ত্রয়ীর জন্য অনুমিত৷

ইশা 48:16 এবং 61:1-এ, পুত্র কথা বলার সময় পিতা এবং পবিত্র আত্মার কথা উল্লেখ করেছেন৷ ইশা 61:1-কে লিউক 4:14-19-এর সাথে তুলনা করলে দেখা যায় য়ে পুত্রই কথা বলছেন৷ ম্যাথিউ 3:16-17 বর্ণনা করে প্রভূ যীশুর দীক্ষাগ্রহণের উত্সবের বিষয়ে৷ এই অনুচ্ছেদে দেখা যায় ঈশ্বর যিনি পবিত্র আত্মা ঈশ্বর পুত্রের মাধ্যমে অবতরন করেছেন যখন ঈশ্বর পিতা তাঁর পুত্রের ওপর নিজের আনন্দলাভের দাবি করেছেন৷ ম্যাথিউ 28:19 এবং 2 কোরিন্থিয়ানস 13:14 হল ত্রয়ীতে তিন জন ভিন্ন ব্যক্তির উদাহরণ রয়েছে৷

3) বিভিন্ন অনুচ্ছেদে ত্রয়ীর একজনের থেকে আরেক জনকে পৃথক করা হয়েছে৷ ওল্ড টেস্টামেন্টের “ঈশ্বর”-এর সাথে (জেনেসিস্ 19:24; হোসিয়া 1:4) এর “ঈশ্বর” পৃথক৷ (স্লাম্ 2:7, 12; প্রোভার্বস্ 30:2-4) এতে ঈশ্বর হলেন পুত্র৷ আত্মা “প্রভূ” (নাম্বারস্ 27:18) এবং “ঈশ্বর”-এর (স্লাম্ 51:10-12) থেকে পৃথক৷ পুত্র ঈশ্বর, পিতা ঈশ্বরের থেকে পৃথক (স্লাম্ 45:6-7; হিব্রুস্ 1:8-9)৷ নিউ টেস্টামেন্টে, প্রভূ যীশু পিতাকে একজন সাহায্যকারী পাঠাতে বলেছেন, তিনিই পবিত্র আত্মা (জন্ 14:16-17)৷ এই ঘটনার থেকে বোঝা যায় যে প্রভূ যীশু নিজেকে পিতা বা পবিত্র আত্মা হিসেবে স্বীকার করেননি৷ গসপেলের অন্যান্য স্থানে যেখানে প্রভূ যীশু পিতার সাথে কথা বলেছেন সেই অংশগুলোরও উল্লেখ করা প্রয়োজন৷ তিনি কি নিজের সাথেই কথা বলছিলনেন? না৷ তিনি ত্রয়ীর অন্য আর একজনের সাথে কথা বলছিলেন – তিনিই পিতা৷

4) এই ত্রয়ীর প্রতিটি সদস্যই ঈশ্বর৷ পিতা ঈশ্বর (জন্ 6:27; রোমানস্ 9:5; কোলোসিয়ানস 2:9; হিব্রুস্ 1:8; জন্ 5:20)৷ পবিত্র আত্মাই ঈশ্বর (এক্টস্ 5:3-4; 1 কোরিন্থিয়ানস্ 3:16)৷

5) এই ত্রয়ীর মধ্যে পদমর্যাদা রয়েছে৷ ধর্মগ্রন্থে আছে পবিত্র আত্মা পিতার কাছে নিম্নপদস্থ এবং পুত্র হলেন পিতার নিম্নপদস্থ৷ এটি হল আভ্যন্তরীণ সম্পর্ক এবং এর ফলে ত্রয়ীর কোনো ব্যক্তিরই ঈশ্বরত্ব অস্বীকৃত হয়নি৷ এই সম্পর্ক অর্থাত্ ঈশ্বরের অসীমতা আমাদের সীমাবদ্ধ মন একেবারেই বুঝতে পারে না৷ পিতার সম্পর্কে জানতে হলে দেখুন লিউক 22:42, 15:26, 16:7, এবং বিশেষভাবে জন্ 16:13-14৷

6) ত্রয়ীর প্রত্যেক সদস্যের আলাদা আলাদা কাজ আছে৷ পিতা হলেন এই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ কারণ বা উত্স (1 কোরিন্থিয়ানস্ 8:6; রিভিলেশান্ 4:11); ঈশ্বরীয় উন্মোচন (রিভিলেশান্ 1:1); মোক্ষ (জন্ 3:16-17); এবং প্রভূ যীশুর মানবিক কাজকর্ম (জন্ 5:17, 14:10)৷ পিতা এই সকল কর্মই শুরু করেন৷

পুত্র হলেন সেই প্রতিনিধি যাঁর মাধ্যমে পিতা এই কাজগুলি করে থাকেন : বিশ্বের সৃষ্টি এবং তার রক্ষা (1 কোরিন্থিয়ানস্ 8:6, জন্ 1:3; কোলসিয়ানস্ 1:16-17); শাশ্বত উন্মোচন (জন্ 1:1, 16:12-15; ম্যাথিউ 11:27; রিভিলেশান 1:1); এবং মোক্ষ (2 কোরিন্থিয়ানস্ 5:19; ম্যাথিউ 1:21; জন্ 4:42)৷ পিতা, পুত্রের মাধ্যমেই এক সকল কাজ করে থাকেন কারন পুত্রই হলেন তাঁর প্রতিনিধি৷

পবিত্র আত্মার মাধ্যমে পিতা এই কাজগুলি করান : বিশ্বের সৃষ্টি এবং তার রক্ষা (জেনেসিস্ 1:2; জব্ 26:13; স্লাম্ 104:30); শাশ্বত উন্মোচন (জন্ 16:12-15; এফেসিয়ানস্ 3:5; 2 পিটার 1:21); মোক্ষ (জন্ 3:6; টাইটাস্ 3:5; 1 পিটার 1:2); এবং প্রভূ যীশুর কার্য (ইশা 61:1; এক্টস্ 10:38)৷ পিতা, পবিত্র আত্মার শক্তির মাধ্যমেই এই সকল কাজগুলি করে থাকেন৷

ত্রয়ী সম্পর্কে বিস্তৃত বর্ণনা করার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে৷ যদিও, কোনো জনপ্রিয় বর্ণনাই সম্পূর্ণভাবে সঠিক নয়৷ ডিমের (অথবা আপেল) খোলশ, সাদা অংশ এবং কুসুম হল এর বিভিন্ন অংশ, কিন্তু সম্পূর্ণ ডিম নয়, তেমনই আপেলের খোশা, শাঁস, এবং বীজ আপেলেরই অংশ, কিন্তু সমগ্র আপেল নয়৷ পিতা, পুত্র এবং পবিত্র আত্মা কেউই ঈশ্বরের অংশ নন; তাঁরা প্রত্যেকেই ঈশ্বর৷ জল বর্ণনা তবুও খানিকটা উন্নত, কিন্তু তা সত্ত্বেও এখানেও ত্রয়ীকে সম্পূর্ণভাবে বর্ণনা করা যায়নি৷ তরল, বাষ্প এবং বরফ জলেরই তিনটি প্রকৃতি৷ তবে পিতা, পুত্র এবং পবিত্র আত্মা ঈশ্বরের অংশ নন, তাঁরা প্রত্যেকেই ঈশ্বর৷ তাই, যখন এই বর্ণনাগুলি আমাদের ত্রয়ী সম্পর্কে আমাদের কোনো প্রতিচ্ছবি দেয় তখন তা সম্পূর্ণভাবে সঠিক হয় না৷ একজন অসীম ঈশ্বরকে সীমাবদ্ধ বিবরণ কখনোই সম্পূর্ণভাবে বর্ণনা করতে পারে না৷

খ্রীষ্টান গীর্জার ইতিহাসে ত্রয়ী সম্পর্কে উপদেশাবলী বিভেদ সৃষ্টিকর একটি সমস্যা৷ যদিও ঈশ্বরের বাণীতে ত্রয়ী সম্পর্কে মূল দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, তবুও এর কয়েকটি সমস্যা পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়নি৷ পিতাই হলেন ঈশ্বর, পুত্রই হলেন ঈশ্বর, এবং পবিত্র আত্মাই হলেন ঈশ্বর – কিন্তু ঈশ্বর এক এবং অনন্য৷ এটিই হল ত্রয়ী সম্পর্কে বাইবেলের উপদেশ৷ এর বাইরেও, সমস্যাগুলি একটি সীমা পর্যন্ত তর্কযোগ্য এবং অপ্রয়োজনীয়৷ মানবীয় সীমাবদ্ধ মস্তিস্কের সাহায্যে ত্রয়ীকে সম্পূর্ণভাবে বর্ণনা করার চাইতে, আমাদের উচিত ঈশ্বরের মহত্ব এবং অসীম উচ্চক্ষমতাযুক্ত প্রকৃতির বিষয়ে চিন্তা করা এবং তাঁর সেবা করা৷ “আহা, ঈশ্বরের জ্ঞানের গভীরতা অসীম! তাঁর বিচার অনুসন্ধানের অতীত, এবং তাঁর পথ অনুসরণের অসাধ্য! কে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে বুঝতে পারে? অথবা কে তাঁর পরামর্শদাতা?” (রোমানস্ 11:33-34)৷

বাইবেলে ঈশ্বরের ত্রয়ী রূপ সম্পর্কে কি বলা আছে?    

বাইবেলে বিয়ের আগে যৌনতা/বিবাহপূর্ব যৌনতা সম্পর্কে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: বাইবেলে বিয়ের আগে যৌনতা/বিবাহপূর্ব যৌনতা সম্পর্কে কি বলা আছে?

উত্তর:
কোনো হিব্রু বা গ্রীক শব্দ নেই যার সাহায্যে বাইবেলে নির্দিষ্টভাবে বিয়ের আগে যৌনমূলক আচরনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ বাইবেলে নিশ্চিতভাবে অশ্লীলতা এবং যৌন অবৈধতাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কিন্তু বিয়ের আগে যৌনতা কি যৌনমূলক অবৈধতাকে নির্দেশ করে? 1 কোরিন্থিয়ান্‍স 7:2 অনুসারে, “হ্যাঁ” কি স্পষ্ট উত্তর : “কিন্তু যেহেতু প্রচুর অবৈধতা রয়েছে, তাই প্রতিটি পুরুষের নিজের স্ত্রী থাকা এবং প্রতিটি নারীর নিজের স্বামী থাকা একান্ত প্রয়োজনীয়৷” এই পদ্যে, পল্ বলেছেন যে বিবাহ হল যৌন অবৈধতার “চিকিত্সা”৷ প্রথম কোরিন্থিয়ানস 7:2 প্রয়োজনীয় ভাবে বলেছে যে, যেহেতু মানুষরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং তাই তারা বিয়ের আগেই যৌন জীবন যাপন করে, তাই মানুষের বিয়ে করা উচিত৷ তখন তারা সঠিক পথে নিজেদের কামনাকে পূরণ করতে পারবে৷

যেহেতু 1 কোরিন্থিয়ানস 7:2 স্পষ্টভাবে বলেছে যে বিয়ের আগে যৌনতা হল যৌন অবৈধতা, বাইবেলের সকল পদ্যে যৌনমূলক অবৈধতাকে যেরকম পাপ বলা হয়েছে, সেরকমই বিয়ের আগে যৌনমূলক অবৈধতাকেও পাপ বলা হয়েছে৷ বিয়ের আগে যৌনতা বাইবেলের সংজ্ঞা অনুযায়ী যৌনমূলক অবৈধতা৷ অনেকগুলো ধর্মগ্রন্থ আছে যেখানে বিয়ের আগে যৌনতাকে পাপ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে (অ্যাক্টস্ 15:20; কোরিন্থিয়ান্‍স 5:1; 6:13;18; 10:8; 2 কোরিন্থিয়ান্‍স 12:21; গ্যালাটিয়ান্‍স 5:19; এফেসিয়ান্‍স 5:3; কোলোসিয়ান্‍স 3:5; 1 থেসালোনিয়ান্‍স 4:3; জুড 7)৷ বাইবেলে বিয়ের আগে যৌনতাকে সম্পূর্ণভাবে পরিহার করা উচিত৷ স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যের যৌন সম্পর্ককেই একমাত্র ঈশ্বর অনুমতি দিয়েছেন (হিব্রুস্ 13:4)৷

বেশিরভাগ সময়েই আমরা যৌনতা শুধুমাত্র “আনন্দলাভ” করার দিকটাই দেখে থাকি এবং ভুলে যাই যে যৌনতার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল – নতুন জীবনের সৃষ্টি৷ বিবাহের অন্তর্গত যৌনতা আনন্দদায়ক, এবং ঈশ্বরই এটাকে সেভাবে পরিকল্পনা করেছেন৷ ঈশ্বর চেয়েছেন নারী এবং পুরুষ বিবাহের বন্ধনের মধ্যে থেকে যৌন আনন্দ উপভোগ করুক৷ সলোমনের গান এবং বাইবেলের অন্যান্য অনুচ্ছেদে (প্রোভার্বস্ 5:19-এর মত) স্পষ্টভাবে যৌন আচরণের আনন্দকে বর্ণনা করা হয়েছে৷ যদিও, দম্পতিকে এটা বুঝতে হবে যে ঈশ্বরের ইচ্ছা হল এই যৌনতার মাধ্যেমেই নতুন শিশুর সৃষ্টি হোক৷ তাই যে দুজন মানুষ বিয়ের আগে যৌন আচরণে প্রবৃত্ত হয় তারা দুইভাবে ভুল কাজ করে – তারা আনন্দ লাভ করে যার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়নি, এবং ঈশ্বর নবজাত শিশুর জন্য যে পারিবারিক কাঠামো তৈরি করেছেন তার বাইরে গিয়ে তারা একটি শিশুকে জন্ম দিতে চায়৷

যখন বাস্তবিকভাবে ভুল থেকে ঠিক নিশ্চিত করা হয়, তাই যদি বাইবেলের নির্দেশ অনুযায়ী বিবাহের পূর্বে যৌনতা থেকে বিরত থাকা যায়, তবে বহু যৌন অসুস্থতা থেকে আমরা রক্ষা পাব, অনেক গর্ভপাত কম হবে, অনেক অবিবাহিত মা এবং অযাচিত গর্ভাবস্থার আশঙ্কা কম হবে, এবং বহু শিশুরা যে পিতার অভাবে বড় হয় তা কমে যাবে৷ যখন বিয়ের আগে যৌনতার কথা আসে তখন ঈশ্বরের একমাত্র নীতি হল বিরত থাকা৷ যৌন আচরণ থেকে বিরত থাকলে তা জীবন বাঁচাতে পারে, শিশুদের নিরাপত্তা দিতে পারে, যৌন সম্পর্ককে তার সঠিক মূল্য দিতে পারে, এবং, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এর মাধ্যমে ঈশ্বরকে সম্মান জানাতে পারে৷

বাইবেলে বিয়ের আগে যৌনতা/বিবাহপূর্ব যৌনতা সম্পর্কে কি বলা আছে?    

বাইবেলে বিবাহবিচ্ছেদ ও পুনর্বিবাব সম্পর্কে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: বাইবেলে বিবাহবিচ্ছেদ ও পুনর্বিবাব সম্পর্কে কি বলা আছে?

উত্তর:
সর্বপ্রথমেই, কেউ বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়ে কি ভাবল তা কোনো ব্যাপারই নয়, মালাচি 2:16 মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ : “আমি বিবাহবিচ্ছেদকে ঘৃণা করি, ইসরায়েলের ঈশ্বর অর্থাৎ প্রভূ একথা বলেন৷” বাইবেল অনুযায়ী, বিবাহ হল জীবনব্যাপী প্রতিশ্রুতি৷ “তাই তারা আর দুইজন থাকে না, তারা এক হয়ে যায়৷ তাই ঈশ্বর যাদের একত্র জুড়ে দিয়েছেন, মানুষের তাদের আলাদা করা উচিত নয়” (ম্যাথিউ 19:6)৷ যদিও, ঈশ্বর বুঝতে পেরেছেন, যে যেহেতু বিবাহ দুজন পাপী মানুষকে এক বন্ধনে আবদ্ধ করে, তবে বিবাহবিচ্ছেদ অবশ্যই হবে৷ ওল্ড টেস্টামেন্টে রয়েছে, ঈশ্বর কিছু নিয়ম তৈরি করেছেন বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে এমন নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য (ডিউটারোনমি 24:1-4)৷ প্রভূ যীশু নির্দেশ করেছেন যে এই নীতিগুলি দেওয়া হয়েছে মানুষের মনের কঠোরতার জন্য, শুধুমাত্র ঈশ্বরের ইচ্ছের জন্য নয় (ম্যাথিউ 19:8)৷

বিবাহবিচ্ছেদ এবং পুনর্বিবাহের অনুমতি বাইবেলে দেওয়া আছে কি না এই বিষয়ে তর্ক প্রাথমিকভাবে ম্যাথিউ 5:32 এবং 19:9 এই দুইটি অনুচ্ছেদে প্রভূ যীশুর বাণীর চারদিকে আবর্তিত হয়৷ “বৈবাহিক অবিশ্বাস্যতা ছাড়া” এই উক্তিটির মাধ্যমেই শুধুমাত্র ধর্মগ্রন্থে বিবাহবিচ্ছেদ এবং পুনর্বিবাহ সম্পর্কে অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ অনেক ব্যাখ্যাকারী এটা বুঝতে পারে যে “বাগ্‍দান” পর্বে “বৈবাহিক অবিশ্বাস্যতা”র মত “ব্যতিক্রমী শর্ত” আরোপ করা হয়৷ জিউসের প্রথা অনুযায়ী, একজন পুরুষ এবং নারী “বাগ্‍দান”এর সময় থেকেই বিবাহিত হিসেবে বিবেচিত হয়৷ এই মত অনুযায়ী, “বাগ্‍দান” পর্বেই অবৈধ আচরণও বিবাহবিচ্ছেদের কারন হতে পারে৷

যদিও, গ্রীক অনুবাদ অনুযায়ী “বৈবাহিক অবিশ্বাস্যতা” এমন একটি শব্দ যার অর্থ হল যেকোনো প্রকারের যৌন অবৈধতা৷ এর অর্থ হল ব্যভিচার, বেশ্যাবৃত্তি, অশ্লীলতা প্রভৃতি৷ প্রভূ যীশু হয়ত বলেছেন যে যদি যৌনমূলক অবৈধ আচরন করা হয় তবে বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি আছে৷ যৌনসম্পর্ক বৈবাহিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ : “দুজন মানুষ এক আত্মায় পরিণত হয়” (জেনেসিস্ 2:24; ম্যাথিউ 19:5; এফেসিয়ান্‍স 5:31)৷ তাই, যদি এই দুজন মানুষের কোনো একজন তাদের যৌনসম্পর্ক বিবাহ বহির্ভূত কোনো সম্পর্কের জন্য ভেঙে ফেলে তবে সেই কারনে বিবাহবিচ্ছেদ হতে পারে৷ যদি তাই হয়, এই অনুচ্ছেদে প্রভূ যীশুর মনেও পুনর্বিবাহের ধারণা ছিল৷ “এবং আরেকজনকে বিবাহ” (ম্যাথিউ 19:9) এই উক্তি থেকে বোঝা যায় যে ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ এবং পুনর্বিবাহের অনুমতি আছে, এভাবেই এই বিষয়টিকে বর্ণনা করা হয়েছে৷ এটি বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে যে শুধুমাত্র নির্দোষই পুনরায় বিবাহ করতে পারে৷ যদিও এই ধর্মগ্রন্থে এই কথা বলা নেই, তবুও বিবাহবিচ্ছেদের পরে যাকে প্রতারিক করা হয়েছে ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ স্বরূপ সে পুনরায় বিবাহ করার করুণা লাভ করতে পারে, কিন্তু সে পারে না যে যৌন অবৈধ আচরণ করেছে৷ হয়ত এরকম উদাহরণ আছে যেখানে “দোষী ব্যক্তি” পুনরায় বিবাহ করেছে, তবে তা গ্রন্থে উল্লেখিত নেই৷

কেউ কেউ 1 কোরিন্থিয়ান্‍স 7:15-কে “ব্যতিক্রম” বলে মনে করে, যেখানে একজন অবিশ্বাসী এবং একজন বিশ্বাসীর মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হলে পুনর্বিবাহের অনুমতি আছে৷ যদিও, সেখানে পুনর্বিবাহের বিষয়ে উল্লেখ করা নেই, কিন্তু শুধুমাত্র বলা হয়েছে যদি ঈশ্বরে অবিশ্বাসী ব্যক্তি ঈশ্বরে বিশ্বাসী কাউকে প্রতারণা করে তবে সে তার স্বামী বা স্ত্রীকে পরিত্যাগ করতে পারে৷ অন্যরা দাবি করেন যে গালাগালি (দম্পতি বা শিশু) দেওয়ার কারনেও বিবাহবিচ্ছেদ হতে পারে যদিও বাইবেলে তার কোনো উল্লেখ নেই.. যদিও এই ঘটনার জন্য উল্লেখিত, তবে ঈশ্বরের বাণীর অন্যায়ভাবে প্রয়োগ করা কখনোই উচিত নয়৷

“বৈবাহিক অবিশ্বাসযোগ্যতা”র বিষয়ে ব্যতিক্রমী কারণের অর্থ কি এই নিয়ে তর্ক করে বেশ কিছু সময় নষ্ট হয়েছে, এটি বিবাহবিচ্ছেদের জন্য অনুমতি, এর জন্য প্রয়োজনীয় নয়৷ যদি অশালীন আচরণ করা হয়, তবে একটি দম্পতি ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ গ্রহণ করে স্বামী বা স্ত্রীকে ক্ষমা করে পুনরায় নিজেদের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করতে পারে৷ ঈশ্বর আমাদের আরও অনেক পাপের জন্য ক্ষমা করে দিয়েছেন৷ তাই আমরাও তাঁর পন্থা অনুসরণ করে অশালীনতার পাপ ক্ষমা করতে পারি (এফেসিয়ান্‍স 4:32)৷ যদিও, অনেক ক্ষেত্রে, স্বামী বা স্ত্রী তাদের যৌনমূলক অবৈধ আচরণের জন্য অনুশোচনা করে না৷ হয়ত এখানেই ম্যাথিউ 19:9 প্রয়োগ করা যাবে৷ অনেকে আবার বিবাহবিচ্ছেদের ঠিক পরেই আবার বিয়ে করে নেয় যেখানে ঈশ্বর কিছুদিন তাদের একা থাকতে দিতে চান৷ ঈশ্বর কখনো কখনো কিছু মানুষকে একা রাখতে চান যাতে তাদের মনোযোগ অন্যদিকে না যায় (1 কোরিন্থিয়ান্‍‍স 7:32-35)৷ বিবাহবিচ্ছেদের পরেই পুনরায় বিবাহ হয়ত কোনো কোনো অবস্থায় বিকল্প, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে এটাই একমাত্র বিকল্প৷

এই ঘটনা হতাশাজনক যে খ্রীষ্টানদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের হার পৃথিবীর অবিশ্বাসীদের থেকেও কখনো কখনো বেশি৷ বাইবেলে কঠোরভাবে স্পষ্ট করে বলা আছে যে ঈশ্বর বিবাহবিচ্ছেদ ঘৃণা করেন (মালাচি 2:16) এবং পুনর্মিলন এবং ক্ষমাশীলতাই বিশ্বাসীদের জীবনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত (লিউক 11:4; এফেসিয়ান্‍স 4:32)৷ যদিও, ঈশ্বর উপলব্ধি করেছেন যে বিবাহবিচ্ছেদ হবে, এমনকি তাঁর সন্তানদের মধ্যেও৷ এক বিবাহবিচ্ছেদ এবং/অথবা পুনরায় বিবাহিত মানুষের প্রতি ঈশ্বরের ভালোবাসা কম তা অনুভব করা উচিত নয়, যদি বিবাহবিচ্ছেদ এবং/অথবা পুনরায় বিবাহ ম্যাথিউ-এর 19:9 এই নীতি অনুযায়ী নাও হয়৷ ঈশ্বর প্রায়ই খ্রীষ্টান আনুগত্যহীন পাপীদেরও উন্নতি ঘটান৷

বাইবেলে বিবাহবিচ্ছেদ ও পুনর্বিবাব সম্পর্কে কি বলা আছে?    

বাইবেলে গীর্জায় করপ্রদানের বিষয়ে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: বাইবেলে গীর্জায় করপ্রদানের বিষয়ে কি বলা আছে?

উত্তর:
অনেক খ্রীষ্টানরাই কর প্রদানের সমস্যা নিয়ে সংগ্রাম করে৷ কোনো কোনো গীর্জায় এই করপ্রদান করা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে৷ আবার একই সাথে, অনেক খ্রীষ্টান বাইবেলে উল্লেখিত ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে এই কর প্রদান করাকে অস্বীকার করেছে৷ কর/দান করা আসলে আনন্দ এবং আশীর্ব্বাদ লাভ করার উদ্দেশ্যে করা হয়৷ দুখঃজনকভাবে আজকের অনেক গীর্জায় তাই আসল উদ্দেশ্য নয়৷

গীর্জার উদ্দেশ্যে করপ্রদান করা হল ওল্ড টেস্টামেন্টের ধারণা৷ এই করপ্রদান হল সেই নীতির প্রয়োজনীয়তা যাতে সকল ইসরায়েলীদের উপাসনা গৃহ/মন্দির-এর এলাকায় চাষ করা ফসলের এবং যা তারা উপার্জন করবে তার 10 শতাংশ গীর্জাকে দান করতে হবে (লেভিটাকাস্ 27:30; নাম্বার্‍স 18:26; ডিউটারোনমি 14:24; 2 ক্রনিক্যাল্‍স 31:5)৷ আসলে, ওল্ড টেস্টামেন্টের নীতি অনুযায়ী যে অনেকগুলি করের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা একত্রিত করে 23.3 শতাংশ হয়, শুধুমাত্র 10 শতাংশ নয় যা আজকের দিনে গীর্জায় দেওয়া হয়৷ কেউ কেউ মনে করে যে ওল্ড টেস্টামেন্টে এই কর ছিল ধর্মযাজক এবং নিম্নপদস্থ পুরোহিতদের প্রয়োজনের জন্য দানের মাধ্যেমে অর্থ প্রদান করার পদ্ধতি৷ নিউ টেস্টামেন্টের কোথাও এই নির্দেশ, বা আদেশ নেই যে খ্রীষ্টানদের অবশ্যই এই কর প্রদান করতে হবে৷ পল্ বলেছেন যে খ্রীষ্ট ধর্মে বিশ্বাসীরা নিজেদের আয়ের একটা নির্দিষ্ট অংশ বাঁচিয়ে রেখে দান করতে পারে গীর্জাকে সাহায্য করার জন্য (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 16:1-2)৷

নিউ টেস্টামেন্টের কোথাও বলা নেই যে প্রত্যেককে নিজের আয়ের একটা নির্দিষ্ট শতাংশ আলাদা করে গীর্জার জন্য রাখতে হবে, শুধুমাত্র বলা আছে যে “আয়ের অংশ রাখতে হবে” (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 16:2)৷ খ্রীষ্টান গীর্জার কেউ কেউ ওল্ড টেস্টামেন্টের নির্দেশ অনুযায়ী আয়ের 10 শতাংশ বাঁচিয়ে কর প্রদান করাকে খ্রীষ্টানদের জন্য “সুপারিশযোগ্য সর্বনিম্ন” কর বলে বর্ণনা করেছে৷ নিউ টেস্টামেন্টে এই কর প্রদান করার গুরুত্ব এবং উপকারীতার বিষয়ে বলা আছে৷ আমাদের যতটা ক্ষমতা ততটাই দেওয়া উচিত৷ কখনো কখনো তার অর্থ হল 10 শতাংশেরও বেশি দেওয়া; কখনো হয়ত কম৷ এই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে গীর্জার প্রয়োজন এবং ব্যক্তির ক্ষমতার ওপর৷ প্রতিটি খ্রীষ্টানকে অধ্যাবসায়ের সাথে প্রা্র্থনা করতে হবে ঈশ্বরের জ্ঞান লাভ করার জন্য যাতে প্রত্যেকে এই কর প্রদান করতে সক্ষম হয় এবং/অথবা কতটা কর দিতে হবে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে (জেম্‍স 1:5)৷ সবার আগে, সমস্ত করদান এবং উৎসর্গ করতে হবে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে শুদ্ধ চিন্তা এবং উপাসনার মনোভাব নিয়ে এবং প্রভূ খ্রীষ্টের দেহকে সেবা করার উদ্দেশ্যে৷ “প্রতিটি মানুষের তাই দেওয়া উচিত যা কিনা সে নিজের মনে ঠিক করেছে, অনিচ্ছুকভাবে বা চাপের জন্য নয়, কারন ঈশ্বর তাদেই পছন্দ করেন যারা আনন্দের সাথে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে দান করে” (2 কোরিন্থিয়ান্‍স 9:7)৷

বাইবেলে গীর্জায় করপ্রদানের বিষয়ে কি বলা আছে?    

নারী ধর্মযাজক / ধর্মপ্রচারক? মন্ত্রীত্বে থাকা নারীদের সম্বন্ধে বাইবেলে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: নারী ধর্মযাজক / ধর্মপ্রচারক? মন্ত্রীত্বে থাকা নারীদের সম্বন্ধে বাইবেলে কি বলা আছে?

উত্তর:
নারীদের ধর্মযাজক / ধর্মপ্রচারক হিসেবে নিয়োগ করা উচিত কিনা সে বিষয় নিয়ে তর্কই আজকের দিনে গীর্জায় সবচেয়ে আলোচিত বিষয়৷ এর ফলস্বরূপ, এই সমস্যাকে পুরুষ বনাম নারীদের সমস্যা হিসেবে না দেখাই উচিত৷ বেশ কিছু নারীরা আছেন যারা বিশ্বাস করেন যে নারীদের ধর্মযাজক এবং মন্ত্রী হিসেবে কাজ করা উচিত নয় কারন বাইবেলে এর সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা আছে, এবং বেশ কিছু পুরুষরা আছেন যারা বিশ্বাস করেন যে নারীরা ধর্মজাযক হিসেবে কাজ করতে পারেন এবং মন্ত্রী হিসেবে কাজ করার বিষয়েও বাইবেলে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই৷ এই সমস্যাটি বৈষম্যবিষয়ক নয়৷ এটি হল বাইবেলের বর্ণনাবিষয়ক সমস্যা৷

ঈশ্বরের বাণী দাবি করে, “একজন নারীর শান্তিপ্রিয়তা এবং সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ শেখা উচিত৷ আমি কোনো নারীকে পুরুষের ওপর কতৃত্ব করতে বা শিক্ষা দিতে অনুমতি দিই না; তাকে নীরব থাকা উচিত” (1 টিমোথি 2:11-12)৷ গীর্জায়, ঈশ্বর পুরুষ এবং নারীকে আলাদা আলাদা কাজে নিয়োগ করেছেন৷ এইভাবেই মনুষ্যজাতির সৃষ্টি এবং এইভাবেই পৃথিবীতে পাপ প্রবেশ করেছে (1 টিমোথি 2:13-14)৷ ঈশ্বর, ধর্মপ্রচারক পলের মাধ্যমে, নারীদের শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করতে এবং / অথবা পুরুষের ওপর আধ্যাত্মিক কতৃত্ব করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন৷ এই নীতির ফলে আগে থেকেই নারীদের ধর্মজাযক হিসেবে কাজ করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, আর এর সাথে অবশ্যই রয়েছে ধর্মোপদেশ দেওয়া, শিক্ষা দেওয়া, এবং পুরুষদের ওপর আধ্যাত্মিক কতৃত্বের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা৷

নারীদের মন্ত্রীত্বে অংশগ্রহণ করার বিষয়েও বহু “আপত্তি” রয়েছে৷ এর প্রধান কারন ছিল প্রথম শতাব্দীতে নারীরা একেবারে অশিক্ষিত ছিল তাই তাদের শিক্ষা দেওয়ার বিষয়ে পল্ বাধা দিয়েছিলেন৷ যদিও, 1 টিমোথি 2:11-14-তে শিক্ষার অবস্থা সম্পর্কে কিছুই বলা নেই৷ যদি মন্ত্রীত্বের জন্য শিক্ষিত হওয়া অপরিহার্য হয়, তবে যীশুর বেশীর ভাগ শিষ্যই যোগ্য হবে না৷ দ্বিতীয় আপত্তি হল পল্ শুধুমাত্র এফেসাস্-এর নারীদের শিক্ষকতা করতে বাধা দিয়েছেন (1 টিমোথি, টিমোথিকে লেখা হয়েছে, যিনি এফেসাস গীর্জার ধর্মযাজক ছিলেন)৷ আর্টেমিসে এফেসাস শহর বিখ্যাত ছিল মন্দিরের জন্য, নকল গ্রীক / রোমান দেবীদের জন্য৷ আর্টেমিসে পূজা-অর্চনার অধিকার ছিল নারীদের৷ যদিও, 1 টিমোথি বইটিতে আর্টেমিসের কোনো বর্ণনাই নেই, এমনকি পলও 1 টিমোথি 2 :11-12-তে এই নিষেধাজ্ঞার কারন হিসেবে আর্টেমিসের পূজা-অর্চনার পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেননি৷

তৃতীয় সাধারণ আপত্তি হল পল এখানে শুধুমাত্র স্বামী স্ত্রীর কথা উল্লেখ করেছেন, পুরুষ নারীর কথা নয়৷ অনুচ্ছেদে যে গ্রীক শব্দগুলি আছে তা নির্দেশ করেছে স্বামী স্ত্রীদের; যদিও, এই শব্দগুলরি মূল অর্থ পুরুষ এবং নারীকেই নির্দেশ করেছে৷ আবার, একই গ্রীক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে 8-10 পদ্যে৷ শুধুমাত্র স্বামীরাই কি রাগ ও ত্রুটি মুক্ত ভাবে প্রা্র্থনা করতে পারে (পদ্য 8)? শুধুমাত্র স্ত্রীদেরই কি শালীনভাবে পোশাক পরতে হবে, ভালো আচরন করতে হবে, এবং ঈশ্বরের অর্চনা করতে হবে (পদ্য 9-10)? অবশ্যই না৷ পদ্য 8-10 নির্দেশ করা হয়েছে সমস্ত পুরুষ এবং নারীদের জন্য, শুধুমাত্র স্বামী এবং স্ত্রীদের জন্য নয়৷ পদ্য 11-14-তে কোনো সুইচ নির্দেশ করা নেই যা স্বামী এবং স্ত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট৷

এই বর্ণনার বিরুদ্ধে আরেকটি আপত্তির কারন হল বাইবেলে বেশ কিছু নারীর উল্লেখ পাওয়া যায় যাঁরা নেতৃত্ব দান করেছিলেন, যেমন ওল্ড টেস্টামেন্টের মারিয়াম, দেবোরাহ, এবং হুলদাহ৷ এই আপত্তি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রমান করতে অক্ষম৷ প্রথমত, দেবোরাহ ছিলেন 13 জন পুরুষ বিচারকের মধ্যে একমাত্র নারী বিচারক৷ হুলদাহ ছিলেন বাইবেলে বর্ণিত ডজন খানেক পুরুষ ধর্মপ্রচারকের মধ্যে একমাত্র নারী ধর্মপ্রচারক৷ মারিয়াম যে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তা ছিল মোজেস এবং আরনের বোন হিসেবে৷ রাজার সময়ে সবচেয়ে বিখ্যাত নারীরা ছিলেন আথালিয়া এবং জেহবেল্ — ঈশ্বরীয় নারীর ব্যতিক্রমী উদাহরণ৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যদিও, ওল্ড টেস্টামেন্টের নারীদের এই সমস্যা ছিল না৷ 1 টিমোথির গ্রন্থ এবং অন্য ধর্মসম্বন্ধীয় পত্রে গীর্জার সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টান্ত উন্মোচিত হয়েছে — প্রভূর দেহ — এবং এই দৃষ্টান্ত অন্তর্ভূক্ত করে গীর্জার কতৃত্বের গঠন, ইসরায়েল দেশ বা অন্য কোনো ওল্ড টেস্টামেন্টের দেশের জন্য নয়৷

নিউ টেস্টামেন্টে প্রিসিলায়া এবং ফোয়েবকে ব্যবহার করে একই ধরণের তর্ক করা হয়েছে৷ অ্যাক্টস্ 18-তে, প্রিসিলিয়া এবং অ্যাকিলাকে উপস্থাপিক করা হয়েছে প্রভূ খ্রীষ্টের বিশ্বাসযোগ্য মন্ত্রী হিসেবে৷ প্রিসিলিয়ার নাম আগে বলা হয়েছে, যা নির্দেশ করে যে তিনি নেতৃত্বে নিজের স্বামীর থেকে অনেক “যোগ্য” ছিলেন৷ যদিও, 1 টিমোথি 2:11-14-এ কোথাও এর প্রমান মেলে না যে প্রিসিলায়া পরিচালনার কাজে অংশগ্রহণ করেছিলেন৷ প্রিসিলায়া এবং অ্যাকিলা উভয়ই অ্যাপোলোস্‍কে নিজেদের গৃহে নিয়ে আসেন এবং শিষ্যত্ব দান করেন, ঈশ্বরের বাণী আরো স্পষ্টভাবে তার কাছে বর্ণনা করেন (অ্যাক্টস্ 18:26)৷

রোমান্‍স 16:1-এ, যদিও ফোয়েবকে “দাসী”র পরিবর্তে একজন “ধর্মপোদেষ্টা” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, তবে এর অর্থ এই নয় যে ফোয়েব গীর্জায় একজন ধর্মপোদেশক ছিলেন৷ “শিক্ষা দিতে সক্ষম” এই যোগ্যতা দান করা হয়েছে বয়স্কদের, উচ্চপদস্থ যাজকদের নয় (1 টিমোথি 3:1-13; টাইটাস্ 1:6-9)৷ বয়স্করা/বিশপরা/ধর্মপোদেশকদের বর্ণনা করা হয়েছে “একজন স্ত্রীর স্বামী”, “একজন মানুষ যার সন্তানরা বিশ্বাস করে”, এবং “এমন মানুষ যাকে শ্রদ্ধা করা যায়” এই হিসেবে৷ এই উক্তিগুলি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে এগুলি কোনো পুরুষকেই নির্দেশ করছে৷ এর সাথে, 1 টিমোথি 3:1-13 এবং টাইটাস্ 1:6-9-তে আছে, পুংলিঙ্গের সর্বনামই সর্বদা ব্যবহৃত হত গুরুজন/বিশপ/ধর্মপোদেকদের নির্দেশ করতে৷

1 টিমোথি 2:11-14-র গঠন এই “কারন”কে সম্পূর্ণভাবে স্পষ্ট করে দেয়৷ পদ্য 13 শুরু হয় “জন্য” এবং “কারন” দেয় পদ্য 11-12-তে পলের বিবৃতিতে৷ নারীর শিক্ষা দেওয়ার এবং পুরুষের ওপর কোনো অধিকার নেই কেন? কারন, “প্রথমে আদমের সৃষ্টি হয়েছে এবং পরে ইভ৷ এবং আদম প্রতারিত হয়নি, বরং নারীই প্রতারিত হয়েছে৷” ঈশ্বর প্রথমে আদমকে সৃষ্টি করেছেন এবং তারপরে আদমের “সহকারী” হিসেবে ইভকে সৃষ্টি করেছেন৷ সৃষ্টির এই নীতির বিশ্বজনীন ক্রমই আমাদের পরিবারে (এফেসিয়ান্‍স 5:22-23) এবং গীর্জায় প্রয়োগ করা হয়৷ ইভ যে প্রতারিত হয়েছিল তার জন্যই কারনের জন্যই নারীরা ধর্মযাজক হিসেবে কাজ করতে বা পুরুষের ওপর আধ্যাত্মিক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে না৷ এই ঘটনা থেকে কারো কারো মনে হয় যে নারীরা শিক্ষা দিতে পারে না কারন তাদের সহজেই প্রতারিত করা যায়৷ এই ধারনা তর্কের যোগ্য, কিন্তু যদি নারীদের সহজে প্রতারণা করা যায়, তবে শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার অনুমতি তাদের কেন দেওয়া হয় (যারা সত্যিই প্রতারিত) এবং অন্য নারীরা (যাদের সহজেই প্রতারণা করা যায়)? এই গ্রন্থটি এই কথা বলেনি৷ নারীরা পুরুষকে শিক্ষা দিতে পারে না এবং তাদের ওপর আধ্যাত্মিক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে না, কারন ইভ প্রতারিত হয়েছিল৷ এর ফলে ঈশ্বর পুরুষকেই প্রাথমিক ভাবে গীর্জায় শিক্ষাদানের অধিকার দিয়েছেন৷

অনেক নারীরাই সেবা, করুণা, শিক্ষা এবং মানুষকে সাহায্য করার ব্যাপারে সর্বশ্রেষ্ঠ৷ স্থানীয় গীর্জার বেশিরভাগ কাজ হয়ে থাকে নারীদের দ্বারা৷ গীর্জায় নারীদের সমবেত প্রার্থনা বা ভবিষ্যদ্বাণী করার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 11:5), শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞা আছে পুরুষকে আধ্যাত্মিক বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার বিষয়ে৷ বাইবেলের কোথাওই নারীদের পবিত্র আত্মার অর্চনা করার থেকে বাধা দেওয়া হয়নি (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 12)৷ নারী, পুরুষের মতই, সকলকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে, আত্মার ফল প্রদর্শন করতে পারে (গ্যালাটিয়ান্‍স 5:22-23), এবং বঞ্চিতদের গস্‍পেল দেওয়ার দাবি করতে পারে (ম্যাথিউ 28:18-20; অ্যাক্টস্ 1:8; 1 পিটার 3:15)৷

ঈশ্বর নির্দেশ দিয়েছেন যে শুধুমাত্র পুরুষদেরই অধিকার আছে গীর্জায় আধ্যাত্মিক শিক্ষা দান করার৷ এর কারন এই নয় যে পুরুষরাই সবসময় বেশি ভালো শিক্ষক হয়, অথবা নারীরা নিম্নতর এবং কম বুদ্ধিমতী হয় (এটি আসল ব্যাপার নয়)৷ আসলে এইভাবেই ঈশ্বর গীর্জার কাজের পদ্ধতিকে সাজিয়েছেন৷ পুরুষরাই আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের নজির তৈরি করবে — তাদের জীবন এবং বাণীর মাধ্যমে৷ নারীকে পুরুষের চেয়ে কম কতৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে৷ নারীকে অনুপ্রেরণা দেওয়া হবে অন্য নারীদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য (টাইটাস্ 2:3-5)৷ বাইবেল নারীকে শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি৷ একমাত্র যে কাজের বিষয়ে নারীদের নিষেধ করা হয়েছে তা হল পুরুষদের শিক্ষা এবং আধ্যাত্মিক বিষয়ে জ্ঞান দেওয়া৷ এই যুক্তি অনুসারে নারীদের ধর্মযাজক / ধর্মপ্রচারক হিসেবে কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে৷ এর ফলে কোনোভাবেই নারীরা কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায় নি, কিন্তু তাদের মন্ত্রীত্ব প্রদান করার মাধ্যমেই ঈশ্বরের পরিকল্পনা এবং তাঁর দেওয়া উপহারের সাথে নারীরা একাত্বতা বোধ করতে পারে৷

নারী ধর্মযাজক / ধর্মপ্রচারক? মন্ত্রীত্বে থাকা নারীদের সম্বন্ধে বাইবেলে কি বলা আছে?    

বাইবেলে ভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাহ প্রসঙ্গে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: বাইবেলে ভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাহ প্রসঙ্গে কি বলা আছে?

উত্তর:
ওল্ড টেস্টামেন্টে ইসরায়েলীদের ভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাহ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (ডিউটারোনমি 7:3-4)৷ যদিও, এর কারন প্রাথমিকভাবে জাতিভেদ ছিল না৷ বরং, এইটি ছিল ধর্মীয়৷ যে কারনে ঈশ্বর ভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাহের বিরোধীতা করেছেন তা হল অন্য জাতির মানুষেরা মূর্তিপূজারী এবং নকল ঈশ্বরের উপাসক হতে পারে৷ ইসরায়েলিরা ঈশ্বরের পথের থেকে বিচ্যুত হতে পারে যদি তারা মূর্তিপূজায় বিশ্বাসী বা ম্লেচ্ছ বা নীচজাতির কাউকে বিবাহ করে৷ এই একই নীতি নিউ টেস্টামেন্টেও রয়েছে, কিন্তু অনেকটাই অন্যভাবে : “কোনোভাবেই অবিশ্বাসীদের সাথে মিলিত হওয়া চলবে না৷ কিসের জন্য ন্যায় এবং অন্যায় একই সাথে থাকব? অথবা আলোর সাথে অন্ধকারের কিসের সম্পর্ক?” (2 কোরিন্থিয়ানস 6:14)৷ যেভাবে ইসরায়েলিদের (যারা এক এবং অনন্য ঈশ্বরে বিশ্বাসী) আদেশ দেওয়া হয়েছে মূর্তিপূজায় বিশ্বাসীদের বিবাহ না করতে, তেমনই খ্রীষ্টানদের (যারা এক এবং অনন্য ঈশ্বরে বিশ্বাসী) আদেশ দেওয়া হয়েছে অবিশ্বাসীদের বিবাহ না করতে৷ নির্দিষ্টভাবে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে, না, বাইবেলে বলা নেই যে ভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাহ অনুচিত৷

মার্টিন লুথার কিং বলেছেন, একজন মানুষকে বিচার করা হবে তার চরিত্রের দ্বারা, তার গায়ের রঙ দিয়ে নয়৷ জাতির ভিত্তিতে সুবিধা ভোগ করার কোনো সুযোগ খ্রীষ্টানদের জীবনে নেই (জেমস্ 2:1-10)৷ জীবনসঙ্গী নির্বাচনের সময়, একজন খ্রীষ্টানকে সবসময় সেদিকে নজর রাখতে হবে যে তার জীবনসঙ্গী যেন প্রভু যীশু খ্রীষ্টতে বিশ্বা্সী হয় (জন্ 3:3-5)৷ খ্রীষ্টতে বিশ্বাস, গায়ের রঙে নয়, হল জীবনসঙ্গী নির্বাচনের জন্য বাইবেলের নির্দেশ৷ ভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাহ আসলে সঠিক বা ভুলের বিষয় নয়, আসলে তা হল জ্ঞান, উপলব্ধি এবং প্রার্থনার বিষয়৷

একমাত্র যে কারনের জন্য ভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাহ নিয়ে ভাবা উচিত কারন অন্য সকলে এই বিবাহ সহজে মেনে নিতে পারবে না এবং হল সেইজন্য কিছু সমস্যা সেই দম্পতিকে ভোগ করতে হবে৷ বহু ভিন্ন জাতির দম্পতিকে বৈষম্য এবং বিদ্রুপের সম্মুখীন হতে হয়, কখনো বা নিজেদের পরিবারের থেকেও৷ আবার যখন কোনো ভিন্ন জাতির দম্পতির সন্তান তাদের থেকে বা নিজেদের ভাইবোনদের থেকে আলাদা গায়ের রঙ পায় তখনও সেই দম্পতিকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়৷ একটি ভিন্ন জাতির দম্পতিকে বিবাহের আগেই এইসব ভেবে রাখতে হবে এবং এর জন্য তৈরি থাকতে হবে৷ আবার, তা সত্ত্বেও, বাইবেলের একমাত্র নির্দেশ হল একজন খ্রীষ্টানকে এমন কাউকে বিবাহ করতে হবে যে নিজেও খ্রীষ্টে বিশ্বাসী৷

বাইবেলে ভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাহ প্রসঙ্গে কি বলা আছে?    

বাইবেলে উল্কি করা / দেহে ছিদ্র করার বিষয়ে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: বাইবেলে উল্কি করা / দেহে ছিদ্র করার বিষয়ে কি বলা আছে?

উত্তর:
ওল্ড টেস্টামেন্টের নীতিগুলি ইসরায়েলীদের আদেশ দিয়েছে, “নিজের দেহে কোনো ছিদ্র কোরো না অথবা কোনো উল্কির ছাপ রেখো না৷ আমিই ঈশ্বর” (লেভিটিকাস্ 19:28)৷ তাই, যদিও আজকের যুগে বিশ্বাসীদের ওল্ড টেস্টামেন্টের নীতি পালন না করলেও চলে (রোমানস্ 10:4; গ্যালাটিয়ানস্ 3:23-25; এফেসিয়ানস্ 2:15), কিন্তু আসল ঘটনা হল যে উল্কি করার বিরুদ্ধে কিছু নির্দেশ আছে যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক৷ বিশ্বাসীরা উল্কি করতে পারবে কি পারবে না সেই বিষয়ে নিউ টেস্টামেন্টে কিছুই বলা নেই৷

উল্কি করা এবং দেহে ছিদ্র করার সাথে, উন্নত রুচি নির্ধারন করে আমাদের সততা এবং সচেতনতা, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে আমাদের আশীর্ব্বাদ করার জন্য এবং সেই নির্দিষ্ট ক্রিয়া ব্যবহার করে ভালো উদ্দেশ্যের জন্য৷ “তাই তুমি খাও বা পান কর যাই কর না কেন তা করবে ঈশ্বরের করুণার জন্য” (1 কোরিন্থিয়ানস্ 10:31)৷ নিউ টেস্টামেন্টে দেহে উল্কি করা বা ছিদ্র করার ব্যাপারে কোনো নিষেধ যেমন করা নেই, তেমনই এরকম বিশ্বাস করার কোনো কারনও নেই য়ে ঈশ্বর আমাদের এইসব করতে নির্দেশ দিয়েছেন৷

একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থের নীতি অনুযায়ী যদি কোনো কাজ করার পূর্বে সন্দেহ থাকে য়ে সেই কাজ ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারবে কি পারবে না তবে সেই কাজে অংশগ্রহণ না করাই ভাল৷ রোমানস্ 14:23 আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে কোনো কাজ যদি আমরা বিশ্বাস থেকে না করি তবে তাই হল পাপ৷ আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমাদের দেহ এবং আমাদের আত্মা, ঈশ্বরের সম্পদ৷ যদিও 1 কোরিন্থিয়ানস্ 6:19-20-এ সরাসরিভাবে উল্কি বা ছিদ্র করার বিষয়ে কিছু বলা নেই, তবে এটি আমাদের একটি নীতি দিয়েছে৷ “তুমি কি জান না যে তোমার দেহ হল পবিত্র আত্মার মন্দিরের মত, যিনি তোমার মধ্যে অবস্থান করেন, যাঁকে তুমি ঈশ্বরের কাছ থেকে পেয়েছ? তুমি তোমার নিজের নও; তোমার সৃষ্টির জন্য মূল্য দেওয়া হয়েছে৷ তাই ঈশ্বরকে তোমার দেহের দ্বারা সম্মান কর৷” এই মহান সত্যের একটি বাহক হল আমরা কি করি এবং আমাদের দেহকে কোথায় নিয়ে যাই৷ যদি আমাদের দেহ ঈশ্বরের সম্পদ হয়, তবে সেই দেহে উল্কি বা ছিদ্রের দ্বারা “চিহ্নিত করার” আগে আমাদের নিশ্চিতভাবে জানতে হবে যে ঈশ্বর তার জন্য “অনুমতি” দিয়েছেন৷

বাইবেলে উল্কি করা / দেহে ছিদ্র করার বিষয়ে কি বলা আছে?    

বাইবেলে মদ খাওয়ার বিষয়ে কি বলা আছে? খ্রীষ্টানদের জন্য মদ খাওয়া কি পাপ?



প্রশ্ন: বাইবেলে মদ খাওয়ার বিষয়ে কি বলা আছে? খ্রীষ্টানদের জন্য মদ খাওয়া কি পাপ?

উত্তর:
মদ খাওয়ার বিষয়ে ধর্মগ্রন্থে অনেক কিছু বলার আছে (লেভিটিকাস্ 10:9; নাম্বার্‍স 6:3; ডিউটারোনমি 29:6; জাজেস্ 13:4, 7, 14; প্রোভার্বস্ 20:1; 31:4; ইশা 5:11; 24:9; 28:7; 29:9; 56:12)৷ যদিও, ধর্মগ্রন্থে বিয়ার, মদ, অথবা অন্য কোনো পানীয় যাতে অ্যালকোহল আছে, তা খাওয়ার বিষয়ে খ্রীষ্টানদের নিষেধ করা নেই৷ আসলে, কিছু ধর্মগ্রন্থ মদ খাওয়াকে ভালো দিক থেকে বর্ণনা করা হয়েছে৷ এক্লেসিয়েস্‍টেস্ 9:7 নির্দেশ করে, “খুশি মনে মদ পান কর৷” স্লাম্‍স 104:14-15 বর্ণনা করে যে ঈশ্বর মদিরা দিয়েছেন “মানুষের হৃদয়ে আনন্দের সঞ্চার করতে৷” আমোস্ 9:14 বলে যে নিজের আঙুরের বাগান থেকে মদ খাওয়া ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ স্বরূপ৷ ইশা 55:1 উৎসাহ দিয়েছে, “হ্যাঁ, এস এবং ক্রয় কর মদ ও দুধ...”

মদ পান করার বিষয়ে ঈশ্বর খ্রীষ্টানদের মাতাল হওয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন (এফেসিয়ান্‍স 5:18)৷ বাইবেল মাতাল হওয়া এবং এর প্রভাব থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয় (প্রোভার্বস্ 23:29-35)৷ খ্রীষ্টানদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কোনো কিছুই যেন তাদের শরীরের ওপর “প্রভূত্ব” করতে না পারে (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 6:12; 2 পিটার 2:19)৷ বেশি পরিমানে মদ খাওয়া অবশ্যই নেশা৷ ধর্মগ্রন্থ খ্রীষ্টানদের সে সকল কাজ করতে নিষেধ করে যা কিনা অন্যদের মনে আঘাত করে অথবা তাদেরকেও পাপ কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 8:9-13)৷ এই নীতির আলোতে, যে কোনো খ্রীষ্টানের পক্ষে এই কথা বলা খুবই মুশকিল যে সে বেশি মাত্রায় মদ পান করলে ঈশ্বরের কৃপা লাভ করবে (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 10:31)৷

যীশু জলকে মদে পরিণত করেছিলেন৷ এই ঘটনা থেকে বোঝা যায় যে, কোনো অনুষ্ঠানে প্রভূ যীশু মদ খেতেন (জন্ 2:1-11; ম্যাথিউ 26:29)৷ নিউ টেস্টামেন্টের যুগে, জল খুব পরিষ্কার ছিল না৷ আধুনিক পয়ঃপ্রণালী ছাড়া আগেকার দিনের জল প্রায়শই থাকত ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্য নানা ধরণের জীবাণু মিশ্রিত৷ আজকের দিনেও তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশে এই সমস্যা রয়েছে৷ এর ফলেও মানুষেরা প্রায়শই মদ খেত (অথবা আঙুরের রস) কারন এই জিনিসটি অনেক কম দূষিত৷ 1 টিমোথি 5:23-তে, পল্ টিমোথিকে জল খেতে নিষেধ করেছেন (তা হয়ত তাঁর পেটের সমস্যার জন্য হতে পারে) এবং তার পরিবর্তে মদ খেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ তখনকার দিনে, মদ জারিত করা হত (অ্যালকোহনের পরিমান), কিন্তু আজকের দিনের মত করে নয়৷ এটা বলা ঠিক হবে না যে সেগুলি আঙুরের রস ছিল, কিন্তু তেমন এটাও বলা ঠিক হবে না যে আজকের দিনে যে মদ ব্যবহৃত হয় আগেও তাই হত৷ আবার, ধর্মগ্রন্থে বিয়ার, মদ, অথবা অন্য কোনো পানীয় যাতে অ্যালকোহল আছে, তা খাওয়ার বিষয়ে খ্রীষ্টানদের নিষেধ করা নেই৷ মদ আসলে পাপের কারন নয়৷ তবে মাতলামি এবং নেশা করা থেকে খ্রীষ্টানদের বিরত থাকতে হবে (এফেসিয়ান্‍স 5:18; 1 কোরিন্থিয়ান্‍স 6:12)৷

মদ, অল্প পরিমানে খেলে, তা ক্ষতিকর অথবা নেশার কারন কোনোটিই নয়৷ আসলে, কিছু ডাক্তাররা অল্প পরিমানে মদ খাওয়ার কথা বলেন শরীরের উপকারের জন্য, বিশেষভাবে হৃদয়ের জন্য৷ অল্প পরিমানে মদ খাওয়া খ্রীষ্টানদের স্বাধীনতার বিষয়৷ মাতাল হওয়া এবং নেশা পাপ৷ যদিও, মদ এবং তার প্রভাবের বিষয়ে বাইবেলে আছে, সহজ উত্তেজনার জন্য বেশি পরিমানে মদ খাওয়া, বা এই অবস্থায় অন্যের কোনো ক্ষতি করা, এইসব কারনের জন্য খ্রীষ্টানদের পক্ষে মদ খাওয়া সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করা উচিত৷

বাইবেলে মদ খাওয়ার বিষয়ে কি বলা আছে? খ্রীষ্টানদের জন্য মদ খাওয়া কি পাপ?    

জুয়া খেলা কি পাপ? বাইবেলে জুয়াখেলার সম্পর্কে কি বলা আছে?



প্রশ্ন: জুয়া খেলা কি পাপ? বাইবেলে জুয়াখেলার সম্পর্কে কি বলা আছে?

উত্তর:
বাইবেলে নির্দিষ্টভাবে জুয়াখেলা, শর্ত আরোপ অথবা লটারির জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি৷ যদিও, বাইবেল আমাদের সতর্ক করে, অর্থের লোভ থেকে দূরে থাকতে (1 টিমোথি 6:10; হিব্রুজ্ 13:5)৷ ধর্মগ্রন্থ আমাদের আরও উৎসাহ দিয়েছে “দ্রুত ধনী হওয়া” থেকে দূরে থাকতে (প্রোভর্বাস্ 13:11; 23:5; এক্লেসিয়েস্‍টেস্ 5:10)৷ জুয়াখেলাও সেরকরই অর্থের প্রতি লোভ থেকেই উৎপন্ন হয় এবং মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি এবং সহজে ধনী হওয়ার জন্য লোভ দেখায়৷

জুয়াখেলা খারাপ কেন? জুয়াখেলা একটি কঠিণ সমস্যা কারন যদি এটি সাধারণভাবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে খেলা হয়, তবে তাতে টাকার অপচয় হয়, কিন্তু এটি সবসময় খাপার নয়৷ মানুষ এই ধরণের বিভিন্ন কাজকর্মে টাকার অপচয় করে থাকে৷ জুয়াখেলায় কখনো কখনো চলচ্চিত্র দেখা, অকারনে বেশি দামী খাবার খাওয়া বা অনেক দামী জিনিস কেনার থেকেও বেশি অর্থের অপচয় (অনেক ক্ষেত্রে)৷ একই ভাবে, যে টাকা আমরা অন্য ক্ষেত্রে অপচয় করি তাকে জুয়াখেলার সাথে তুলনা করা যায়না৷ টাকার অপচয় করা উচিত নয়৷ অতিরিক্ত টাকা জুয়াখেলার পরিবর্তে ভবিষ্যত প্রয়োজনের জন্য সঞ্চয় করা বা ঈশ্বরের কাজে দান করা উচিত৷

যেখানে বাইবেলে নির্দিষ্ট করে জুয়া খেলার বিষয়ে কিছু বলা নেই তেমনই “সৌভাগ্য” অথবা “সুযোগ”-এর বিষয়েও কিছু বলা নেই৷ উদাহরণস্বরূপ, লেভিটিকাসে লটারির দ্বারা উৎসর্গ করা ছাগল এবং যে ছাগলের ওপর ইহুদীদের প্রধান পুরোহিত জনগনের পাপের বোঝা ন্যস্ত করে তাকে পালিয়ে যেতে দিত তার মধ্যে বাছাই করা হত৷ জসুয়া লটারির মাধ্যমে বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে জমির অধিকার বন্টন করেছিলেন৷ কারা জেরুজালেমের দেয়ালের ভেতর বসবাস করবে তা স্থির করতে নেহেমিয়া লটারি করেছিলেন৷ জুডাসের পরিবর্তে কাকে নির্বাচন করা হবে তার জন্য খ্রীষ্টধর্মের দূতরা লটারি করেছিলেন৷ প্রোভার্বস্ 16:33 বলে, “লটারি নির্ধারিত হয় ভাগ্যের অনুকূলে, কিন্তু এর প্রতিটি সিদ্ধান্ত আসে ঈশ্বরের কাছ থেকে৷”

বাইবেলে জুয়াখেলার স্থান (ক্যাসিনো) বা লটারি সম্পর্কে কি বলা আছে? ক্যাসিনোগুলো সবরকম ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করে জুয়াড়িদের বিপথে চালিত করতে যাতে তারা যত বেশি সম্ভব টাকা জুয়াতে খেলে৷ তারা প্রায়ই প্রচণ্ড দামি এবং কখনো কখনো বিনামূল্যে মদ খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে, যাতে জুয়াড়িরা মাতাল হয়ে যায়, এবং তারা বুদ্ধির দ্বারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে না পারে৷ ক্যাসিনোতে পরিকল্পনামাফিক সব কারচুপির ব্যবস্থা থাকে যাতে বেশি পরিমানে টাকা পাওয়া যায় এবং তার পরিবর্তে জুয়াড়িদের কিছুই ফেরত দিতে না হয় তার জন্য, এবং এর ফলে জুয়াড়িরা পায় ক্ষণস্থায়ী এবং ফাঁকা আনন্দ৷ অনেক সময় লটারির মাধ্যমে শিক্ষার জন্য অনুদান বা নানা ধরণের সামাজিক কাজকর্ম করার ছল করা হয়৷ যদিও, বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে যারা লটারিতে অংশগ্রহণ করে তাদের সাধারণত লটারির টিকিট কেনার মত সামর্থ্যও থাকে না৷ “দ্রুত ধনী হওয়া”র প্রলোভন অনেক বড় লোভ যা কিনা কোনো মানুষের পক্ষে সামলানো প্রায় অসম্ভব৷ এই লোভ জয় করার সম্ভাবনা খুবই কম, তার ফলে বহু মানুষের জীবন নষ্ট হওয়া থেকে বেঁচে যাবে৷

লোটো/লটারির প্রক্রিয়া কি ঈশ্বরকে খুশী করে? অনেক মানুষ দাবি করে যে লটারি বা জুয়া খেলে তারা সেই অর্থ গীর্জার কাজে বা অন্য কোনো ভাল কাজে দান করতে চায়৷ যদিও এই মানসিকতা খুবই ভালো, তবুও বাস্তব হল খুব কম মানুষই জুয়ায় জেতা টাকা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে৷ পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে বড় কোনো লটারি জেতার পর সেই সকল ব্যক্তিরা বেশিরভাগ সময়ই আগের থেকেও অনেক খারাপ অবস্থায় দিনযাপন করে থাকে৷ যদি থাকে, তবে খুব কম মানুষই এই উপার্জিত অর্থ ভালো কাজে ব্যবহার করে৷ আবার, পৃথিবীতে ঈশ্বরের নিজের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য তাঁর আমাদের অর্থের প্রয়োজন হয় না৷ প্রোভার্বস্ 13:11 বলে, “অসতভাবে উপার্জিত অর্থ সহজেই কমে যায়, কিন্তু যে পরিশ্রমের দ্বারা একটু একটু করে উপার্জন করে তার উপার্জিত অর্থ বাড়তে থাকে৷” ঈশ্বর সার্বভৌম এবং তাই তিনি সত্ পথেই গীর্জার জন্য অর্থ সঞ্চয় করেন৷ যে অর্থ মাদক বিক্রি করে বা ব্যাঙ্ক ডাকাতি করে অর্জন করা হয়েছে তা যদি ঈশ্বরকে দান করা হয় তবে কি ঈশ্বরের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে? একেবারেই নয়৷ ধনী যা তার লোভের জন্য দরিদ্র্য মানুষের কাছ থেকে “চুরি” করে সেই অর্থ ঈশ্বরের প্রয়োজনও নয় বা ঈশ্বর চান না৷

প্রথম টিমোথি 6:10 আমাদের বলে, “অর্খের জন্য ভালোবাসাই হল সকল অনর্থের মূল৷ কিছু মানুষ, অর্থের জন্য আগ্রহী, তার বিশ্বাস থেকে দূরে সরে যায় এবং অনেক বিপত্ততে পড়ে৷” হিব্রুস্ 13:5 ঘোষণা করে, “নিজেদের জীবন অর্থের লোভ থেকে বাঁচিয়ে রাখ এবং তোমার যা আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাক, কারন ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘আমি কখনোই তোমাদের ছেড়ে যাব না; আমি কখনোই তোমাদের পরিত্যাগ করব না৷’” ম্যাথিউ 6:24 দাবি করে, “কেউই দুইজন প্রভূর সেবা করতে পারে না৷ হয় তাকে একজনকে ভালোবাসতে হবে এবং অন্যজনকে ঘৃণা করতে হবে, অথবা তাকে একজনের প্রতি অনুগত থাকতে হবে এবং অন্যকে অবজ্ঞা করতে হবে৷ তোমরা একই সাথে ঈশ্বর এবং অর্থের সেবা করতে পার না৷”

জুয়া খেলা কি পাপ? বাইবেলে জুয়াখেলার সম্পর্কে কি বলা আছে?    

জিভে কথার উপহার কি?



প্রশ্ন: জিভে কথার উপহার কি?

উত্তর:
এক্টস্ 2:1-4-এ পেন্টেকস্ট নামক এক উত্সবের দিন প্রথম জিভে শব্দের প্রয়োগ হয়৷ ধর্মগুরুরা বেরিয়ে যান এবং সাধারণ মানুষের সাথে গসপেলের উপদেশাবলী ভাগ করেন, নিজেদের ভাষায় তাদের সাথে কথা বলেছেন : “আমরা তাদের নিজেদের জিভের দ্বারা ঈশ্বরের অলৌকিকত্ব ঘোষণা করতে শুনলাম!” (এক্টস্ 2:11)৷ গ্রীক অনুবাদে জিভ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল “ভাষা৷” তাই, জিভের উপহার হল কোনো ভাষায় কথা বলা যা কোনো ব্যক্তি জানে না এবং যারা সেই ভাষা জানে তাদের ওপর কতৃত্ব করতে ব্যবহার করা হয়৷ 1 কোরিন্থিয়ানস্-এর 12-14 নম্বর অধ্যায়ে, পল্ আলোচনা করেন অলৌকিক উপহার সম্পর্কে এবং বলেন, “এখন, ভাইয়েরা, আমি যদি তোমাদের কাছে আসি এবং কথা বলি, আমি কি তোমাদের কাছে ভালো হতে পারবো, যতক্ষণ না আমি তোমাদের ঈশ্বরের উন্মোচন অথবা জ্ঞান অথবা ভবিষ্যদ্বাণী অথবা কোনো আদেশের শব্দ শোনাচ্ছি?” (1 কোরিন্থিয়ানস্ 14:6)৷ ধর্মগুরু পলের মত অনুযায়ী, এবং এক্টস্-এ বর্ণিত জিভের সাথে চুক্তির মাধ্যমে, জিভের দ্বারা কথা বলা তাদের জন্য মূল্যবান যারা ঈশ্বরের বার্তা নিজেদের ভাষায় শুনতে পারে, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত তা প্রত্যেকের ভাষায় অনুবাদ হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তার কোনো দাম নেই৷

কোনো ব্যক্তির যদি বাকশক্তিকে অনুবাদ করার ক্ষমতা থাকে (1 কোরিন্থিয়ানস্ 12:30) সে যা বলা হয়েছে সেই ভাষা বুঝতে না পারলেও এটা বুঝতে পারবে যে সেই বক্তা কি বলতে চেষ্টা করেছিলেন৷ বাকশক্তির অনুবাদক তখন সেই বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে, যাতে সকলে তা বুঝতে পারে৷ “এই কারনেই জন্যই যে কেউ যখন জিভের মাধ্যমে কথা বলে তখন তার প্রার্থনা হওয়া উচিত যেন সে যা বলতে চাইছে তা অনুবাদ করতে পারে” (1 কোরিন্থিয়ানস্ 14:13)৷ বাকশক্তির বিষয়ে পলের সিদ্ধান্ত হল যে যা অনুবাদ করা হয়নি তা অনেক বেশি শক্তিশালী : “কিন্তু গীর্জায় আমি অকারনে হাজারটা শব্দ বলার চাইতে মাত্র পাঁচটি শব্দ বলতে পছন্দ করবো যা কিনা অন্যদের পথনির্দেশ দেবে” (1 কোরিন্থিয়ানস্ 14:19)৷

এই শব্দের উপহার কি শুধু আজকের জন্য? প্রথম কোরন্থিয়ানস্ 13:8-এ উল্লেক করা হয়েছে যে শব্দের উপহার বিলুপ্ত হচ্ছে, কারন 1 কোরিন্থিয়ানস্ 13:10-এ “উত্কৃষ্ট” ভাষার আগমনের সাথে সাথে পুরনো ভাষা বিলুপ্ত হয়েছে৷ গ্রীক ক্রিয়াপদ যা কিনা ভবিষ্যদ্বাণী এবং জ্ঞানের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল তার ক্রিয়ার কাল ভিন্ন ছিল যা কিনা “বিলুপ্ত” হয়েছিল এবং তার ফলে ভাষা “বিলুপ্ত হয়েছিল”, যা প্রমান করে “উত্কৃষ্ট” ভাষার আগমনের আগেই পূর্বের ভাষা বিলুপ্ত হয়েছিল৷ যখন সম্ভব, এই বিষয়টি পাঠ থেকে সম্পূর্ণভাবে স্পষ্ট নয়৷ ইশা 28:11 এবং জোয়েল 2:28-29-র মত কেউ কেউ নির্দেশ করে যে ভাষার ব্যবহার ঈশ্বরের আসন্ন বিচারের প্রমান৷ প্রথম কোরিন্থিয়ানস্ 14:22 বর্ণনা করে যে ভাষাকে ব্যবহার করা হয় “অবিশ্বাসীদের চিহ্ন” হিসেবে৷ এই যুক্তি অনুযায়ী, শব্দের উপহার হল জিউসের জন্য সতর্কবার্তা যে ঈশ্বর ইসরায়েলকে বিচার করবেন কারন তারা প্রভূ যীশু খ্রীষ্টকে নিজেদের মশিহা হিসেবে স্বীকার করেনি৷ তাই, যখন ঈশ্বর ইসরায়েলকে বিচার করেছিলেন (A.D. 70-তে রোমানদের দ্বারা জেরুজালেম ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল), শব্দের উপহার আর কোনোভাবেই তার অভিপ্রেত উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারে না৷ যখন এই দৃষ্টিভঙ্গী সম্ভব, শব্দের প্রাথমিক উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ হলে তা হয়ত বিলুপ্ত হবে না৷ ধর্মগ্রন্থে নিশ্চিতভাবে বলা নেই যে শব্দের উপহার বিলুপ্ত হয়েছে৷

একই সাথে, আজকের দিনেও কি গীর্জায় শব্দের উপহার ক্রিয়াশীল রয়েছে, এই বিষয়টি ধর্মগ্রন্থের সাথে চুক্তি অনুযায়ী পালন করা উচিত৷ এটি হতে পারত একটি আসল এবং বুদ্ধিদীপ্ত ভাষা (1 কোরিন্থিয়ানস্ 14:10)৷ এর উদ্দেশ্য হল অন্য ভাষার একজন ব্যক্তির সাথে ঈশ্বরের বাণীর সংযোগ স্থাপন করা (এক্টস্ 2:6-12)৷ এটি হল ঈশ্বর ধর্মগুরু পলের মাধ্যমে তাঁর আদেশের সাথে চুক্তি দিয়েছেন, “যদি কেউ একটি ভাষা বলতে পারে, দুটি – অথবা বেশি হলে তিনটি – তা বলা উচিত, একটি ভাষায় একবারই বলা উচিত, এবং কারো উচিত তা অনুবাদ করে দেওয়া৷ যদি কোনো অনুবাদক না থাকে, তবে বক্তার গীর্জায় চুপ করে থাকা উচিত এবং নিজের সাথে এবং ঈশ্বরের সাথে কথা বলা উচিত” (1 কোরিন্থিয়ানস্ 14:27-28)৷ 1 কোরিন্থিয়ানস্ 14:33 অনুযায়ী, “ঈশ্বর কোনো দ্বন্দ্বের সৃষ্টিকর্তা নন, কিন্তু শান্তির সৃষ্টিকর্তা, যা সন্তদের সকল গীর্জায় বর্তমান৷”

ঈশ্বর অবশ্যই একজন ব্যক্তির জিভকে কথা বলার উপহার দিয়ে তাকে অন্য ব্যক্তিদের সাথে যারা কিনা অন্য ভাষায় কথা বলে, যোগাযোগ করতে সক্ষম করতে পারেন৷ পবিত্র আত্মা হলেন আধ্যাত্মিক উপহারে বিকীর্ণ সার্বভৌম শক্তি (1 কোরিন্থিয়ানস্ 12:11)৷ একবার ভেবে দেখ যে যদি ধর্মপ্রচারকদের ভাষার বিদ্যালয়ে ভাষা শিখতে যেতে না হত তাহলে তারা অনেক বেশি উত্পাদনশীল হতেন, এবং তাদের নিজেদের ভাষাতেই সকলের সাথে কথা বলতে পারতেন৷ যদিও, ঈশ্বর কখনো হয়ত তা করেননি৷ নিউ টেস্টামেন্টে যেভাবে ভাষার ব্যবহার হয়েছে আজকের দিনে তা একেবারে আলাদা, তা সত্ত্বেও বলা যায় যে ভাষা হল অত্যন্ত উপযোগী৷ বিশ্বাসীদের বেশিরভাগই যারা কথা বলার ক্ষমতার উপহারকে ব্যবহার করার দাবি করে তারা সঠিক অর্থে সেই কাজ করেনি যেভাবে তা ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ করা আছে৷ এই ঘটনা থেকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে শব্দের উপহার প্রায় বিলুপ্ত হয়েছে অথবা আজকের দিনে গীর্জায় তা ঈশ্বরের পরিকল্পনার মধ্যে সবচেয়ে দুর্লভ৷

জিভে কথার উপহার কি?    

প্রভূ যীশু তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মাঝে তিনদিন কোথায় ছিলেন?



প্রশ্ন: প্রভূ যীশু তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মাঝে তিনদিন কোথায় ছিলেন?

উত্তর:
1 পিটার 3:18-19 বলে, “প্রভূ যীশু সকলের পাপের জন্য একবার মৃত্যুবরণ করেছিলেন, অন্যায়ের জন্য ন্যায়ের, তোমাদের ঈশ্বরের কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য৷ তাঁর দেহ মৃত্যু প্রাপ্ত হয়েছিল কিন্তু তাঁর আত্মা জীবিত ছিল, যার মাধ্যমে তিনি কয়েদে থাকাকালীন আত্মাদের উপদেশ দিয়েছিলেন৷” “আত্মার দ্বারা” এই উক্তি, 18 নম্বর পদ্যের গঠন এবং “জীবদেহের দ্বারা” এই উক্তির গঠন সম্পূর্ণ এক৷ তাই “আত্মা” এই শব্দটিকে বর্ণনা করার জন্য “জীবদেহ” এই শব্দটিই সবচেয়ে উত্কৃষ্ট৷ জীবদেহ এবং আত্মা হল প্রভূ যীশুর দেহ এবং আত্মা৷ “আত্মার দ্বারা (মধ্যে) জীবিত” এই ঘটনাকে নির্দেশ করে যে প্রভূ যীশুর পাপ-বহনকারী এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান তাঁর মানব দেহকে পিতার থেকে আলাদা করে (ম্যাথিউ 27:46)৷ জীবদেহ এবং আত্মার মধ্যে বৈপরীত্য রয়েছে, যার বর্ণনা আছে ম্যাথিউ 27:46 এবং রোমানস্ 1:3-4-তে, এবং কিন্তু প্রভূ যীশুর মানবদেহ এবং পবিত্র আত্মার মধ্যে নয়৷ প্রভূ যীশুর পাপের প্রায়শ্চিত্ত যখন পূরণ হল, তাঁর আত্মার সাথে সম্পর্ক পুনরায় স্থাপিত হয় যা ভেঙে গিয়েছিল৷

প্রথম পিটার 3:18-22 বর্ণনা করে একি প্রয়োজনীয় সংযোগ প্রভূ যীশুর যন্ত্রণা (পদ্য 18) এবং তাঁর মাহাত্ব্য (পদ্য 22)৷ শুধুমাত্র পিটারই এই দুই ঘটনার মধ্যে কি হয়েছিল সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়৷ 19 নম্বর পদ্যে “উপদেশদান” শব্দটি নিউ টেস্টামেন্টে একেবারেই সাধারণ শব্দ নয় যা বর্ণনা করে গসপেলের উপদেশদান৷ এর আক্ষরিক অর্থই হল বার্তার প্রচার৷ প্রভূ যীশু যন্ত্রণা ভোগ করেন এবং ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেছিলেন, তাঁর দেহ মৃত্যুপ্রাপ্ত হয়েছিল, এবং তাঁর আত্মার মৃত্যু হয় যখন তিনি পাপ করেছিলনে৷ কিন্তু তাঁর আত্মা পুনরায় জীবিত হয়েছিল এবং তিনি আত্মাকে পিতার উদ্দেশ্যে প্রদান করেন৷ পিটারের মতবাদ অনুযায়ী, প্রভূ যীশু তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মাঝে কিছু সময় বিশেষ দাবি করেছিলেন “কয়েদে আত্মাদের উদ্দেশ্যে৷”

শুরু করার জন্য, পিটার মানুষদের “প্রেতাত্মা”র পরিবর্তে “আত্মা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন (3:20)৷ নিউ টেস্টামেন্টে, “আত্মা” এই শব্দটি মানুষদের জন্য নয়, দেবদূত বা দৈত্যদের বর্ণনা করতে ব্যবহার করা হত, এবং 22 নম্বর পদ্যেই হয়ত এর অর্থ ছিল৷ আরও, বাইবেলের কোথাওই আমাদের বলা নেই যে প্রভূ যীশু নরক দর্শন করেছিলনেন৷ এক্টস্ 2:31 বলে যে প্রভূ যীশু “পাতাল”-এ গিয়েছিলেন (নতুন আমেরিকার আদর্শ বাইবেল), কিন্তু “পাতাল” নরক ছিল না৷ “পাতাল” শব্দটি মৃতদের অঞ্চল হিসেবে উল্লেখিত, একটি অস্থায়ী স্থান যেখানে প্রতিটি আত্মা মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের জন্য অপেক্ষা করে৷ NASB-র রিভিলেশান্ 20:11-15-তে অথবা নতুন আন্তর্জাতিক সংস্করনে এই দুইটি স্থানের স্পষ্ট পার্থক্য দেওয়া আছে৷ নরক হল মৃতদের বিচারের চিরস্থায়ী এবং চূড়ান্ত স্থান৷ আর পাতাল হল অস্থায়ী স্থান৷

আমাদের প্রভূ তাঁর আত্মাকে পিতার উদ্দেশ্যে সমর্পন করেছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন, এবং মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মাঝে কিছু সময়, মৃতদের অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন যেখানে তিনি আত্মাদের উদ্দেশ্যে কিছু উপদেশ দিয়েছেন (সম্ভবত পতিত দেতদূত; জুড 6 দেখুন) যারা কোনোভাবে নোয়ার সময়ের বন্যার পূর্বের সময়ের সাথে যুক্ত৷ 20 নম্বর পদ্যে এই ঘটনাকে স্পষ্ট করা হয়েছে৷ পিটার আমাদের বলেননি যে তিনি এই শাস্তিপ্রাপ্ত আত্মাদের বিষয়ে কি দাবি করেছেন, কিন্তু এই বার্তা মুক্তির বার্তা হতে পারে না কারন দেবদূতদের তা বাঁচাতে পারে না (হিব্রুস্ 2:16)৷ এই বার্তাটি সম্ভবত শয়তান এবং তার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে জয়ের ঘোষনাপত্র ছিল (1 পিটার 3:22; কোলোসিয়ানস্ 2:15)৷ এফেসিয়ানস্ 4:8-10-এও হয়ত নির্দেশ করা আছে যে প্রভূ যীশু তাঁর মৃত্যুর পূর্বে “স্বর্গের উদ্যান”-এ (লিউক 16:20; 23-43) গিয়েছিলেন এবং যারা তাঁকে বিশ্বাস করে তাদের সকলকে স্বর্গে নিয়ে গিয়েছিলেন৷ এই অনুচ্ছেদ যা ঘটেছিল সেই বিষয়ে কোনো বিশদ বিবরণ দেয় না, কিন্তু বেশিরভাগ বাইবেল পারদর্শীরাই দাবি করেন যে এর অর্থই হল “বন্দীত্বকে বন্দী করতে অগ্রসর হওয়া”৷

তাই, যা বলা যায় তা হল, বাইবেলে খুব স্পষ্টভাবে কিছু বলা নেই যে প্রভূ যীশু মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মাঝের তিনদিন কি করেছিলেন৷ তাই এটা হতেই পারে যে, পতিত দেবদূতদের এবং/অথবা অবিশ্বাসীদের তিনি পাপকে জয় করার বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছিলেন৷ যা আমরা নিশ্চিতরূপে জানতে পারি যে প্রভূ যীশু মানুষদের মুক্তির জন্য দ্বিতীয় সুযোগ দিতে চাইছিলেন না৷ বাইবেল আমাদের বলে যে আমরা মৃত্যুর পরেই বিচারের সম্মুখীন হই (হিব্রুস্ 9:27), সেখানে দ্বিতীয় কোনো সুযোগ আসে না৷ প্রভূ যীশু তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মাঝের সময়ে কোথায় ছিলেন সে সম্পর্কে নিশ্চিতভাব কোনো স্পষ্ট উত্তর নেই৷ যদিও এটি এমন একটি রহস্য যা কিনা আমরা যখন স্বর্গে পৌঁছাবো তখনই একমাত্র উপলব্ধি করতে পারবো৷

প্রভূ যীশু তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মাঝে তিনদিন কোথায় ছিলেন?    

বাইবেলে ডাইনোসার সম্পর্কে কি বলা আছে? বাইবেলে কি ডাইনোসারের অস্তিত্ব আছে?



প্রশ্ন: বাইবেলে ডাইনোসার সম্পর্কে কি বলা আছে? বাইবেলে কি ডাইনোসারের অস্তিত্ব আছে?

উত্তর:
পৃথিবী সৃষ্টির পরে থেকেই খ্রীষ্টানদের মধ্যে এই বিতর্ক চলে আসছে য়ে বাইবেলে ডাইনোসারের অস্তিত্ব ছিল কিনা, জেনেসিস্-এর সঠিক অনুবাদ, এবং কিভাবে আমাদের চারিদিকে যা আছে তার বর্ণনা করা হয়৷ যারা পৃথিবীর প্রাচীন যুগের ইতিহাসে বিশ্বাসী তারা একমত যে বাইবেলে ডাইনোসারের উল্লেখ নেই, কারন, তাদের দৃষ্টান্ত অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রথম মানুষের আবির্ভাবের হাজার হাজার বছর আগেই ডাইনোসার লুপ্ত হয়ে গেছে৷ যে সকল মানুষ বাইবেল লিখেছেন তারা জীবন্ত ডাইনোসার দেখতে পারেন না৷

যারা বিশ্বের কম বয়সের বিষয়ে বিশ্বাসী তারা মেনে নিতে বাধ্য হবে যে বাইবেলে ডাইনোসারের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যদিও তখন সেখানে “ডাইনোসার” শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি৷ পরিবর্তে, সেখানে তান্নিয়ান নামে একটি হিব্রু শব্দ ব্যবহৃত হয়েছিল, যা কিনা ইংরাজী বাইবেলে কয়েকটি বিভিন্ন ধারায় অনুবাদ করা হয়েছিল৷ কখনো এটি “সমূদ্রের দস্যু” এবং কখনো এটি “সর্প৷” এটিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনুবাদ করা হয়েছে “ড্রাগন” হিসেবে৷ তান্নিয়ানের অস্তিত্ব ছিল অনেকটা দৈত্যাকার সরীসৃপের মত৷ এই জীবের বিষয়ে অন্তত তিরিশ বার ওল্ড টেস্টামেন্টে আলোচনা করা হয়েছে এবং সেগুলিকে দেখা গেছে জল এবং স্থল উভয় স্থানে৷

এই দৈত্যাকার সরীসৃপের আলোচনার সাথে, বাইবেলে আরো কয়েকটি প্রাণীর বিষয়ে এমনভাবে বর্ণনা দেওয়া আছে যে কিছু কিছু জ্ঞানী ব্যক্তি বিশ্বাস করেন যে বাইবেলের লেখকরা হয়ত ডাইনোসারেরই বর্ণনা দিয়েছেন৷ বেহেমথকে বর্ণনা করা হয়েছে ঈশ্বরের সকল সৃষ্টির মধ্যে সর্বাধিক ক্ষমতাসম্পন্ন, একটি দৈত্য যার লেজ একটি চিরহরিত্ বৃক্ষের সাথে তুলনা করা হয়েছে (জব্ 40:15)৷ কিছু পণ্ডিত বেহেমতকে জলহস্তি বা হাতির সাথে তুলনা করতে চেয়েছেন৷ অন্যরা বলেছেন যে হাতি এবং জলহস্তির লেজ খুব সরু, যা কিনা বড় গাছের সাথে তুলনীয় নয়৷ ডাইনোসার হল ব্রাকিওসরাস এবং ডিপলোডোকাস্-এর সাথে তুলনীয়, এবং অন্যদিকে, এমন বড় লেজ ছিল যা কিনা সহজেই একটি বড় গাছের গুড়ির সাথে তুলনা করা যায়৷

প্রায় সকল প্রাচীন সভ্যতাতেই দৈত্যাকার সরীসৃপ প্রাণীদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ণনা করা হয়েছে৷ পেট্রোগ্লাইপাস, হস্তনির্মিত শিল্প, এবং এমনকি কিছু মাটির মূর্তি পাওয়া গেছে উত্তর আমেরিকায় যা কিনা ডাইনোসারের আধুনিক যুগে যে রূপ বর্ণনা করা হয়েছে তার সাথে একেবারে মিলে গেছে৷ উত্তর আমেরিকায় যে পাথরের মূর্তি পাওয়া গেছে তা সম্পূর্ণভাবে মানুষ ডিপ্লোডোকাসে চড়ছে এরকম হুবহু করে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং, আশ্চর্যজনকভাবে, ভাল্লুককে তৈরি করা হয়েছে ট্রাইসেরাটপস-এর মত করে, এবং টাইরানোসরাস-এর মত প্রাণীও সৃষ্টি করা হয়েছে৷ রোমান প্রস্তরশিল্প, মায়ানের মৃত্তিকাশিল্প, এবং ব্যবিলন শহরের দেয়াল আমাদের প্রমান দেয় সেকালের মানুষের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক অসীম রুচিবোধ এই জীবদের নির্মাণের বিষয়ে৷ পরিমিত বিচারবোধ যেমন মার্কো পোলোর ii লক্ষ মিশ্রিত হয়েছে আনন্দ-প্রদানকারী পশুদের অদ্ভুত গল্পের সাথে৷ এর সাথে বেশ কিছু নির্ভরযোগ্য নৃবিদ্যাবিষয়ক এবং ঐতিহাসিক প্রমান পাওয়া যায় ডাইনোসার এবং মানুষের একই সাথে অস্তিত্বের বিষয়ে, বেশ কিছু শারিরীক প্রমানও আছে, যেমন উত্তর আমেরিকা এবং পশ্চিম-কেন্দ্রীয় এশিয়াতে মানুষ এবং ডাইনোসারের একসাথে পায়ের ছাপ জীবাশ্ম অবস্থায় পাওয়া গেছে৷

তাই, বাইবেলে কি ডাইনোসারের বর্ণনা আছে? এই বিষয় নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি৷ এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে তোমরা কিভাবে উপলভ্য প্রমানগুলোকে বর্ণনা করবে এবং তোমার চারপাশের পৃথিবীকে কিভাবে দেখবে তার ওপর৷ যদি বাইবেল আক্ষরিকভাবে অনুবাদ করা হয়, তার ফলে একটি আধুনিক পৃথিবীর বর্ণনা পাওয়া যাবে, এবং মানুষ এবং ডাইনোসারের অস্তিত্ব যে একসাথেই ছিল তা স্বীকার করা হবে৷ যদি মানুষ এবং ডাইনোসারের অস্তিত্ব একই সময়ে থাকে, তবে ডাইনোসারগুলোর কি হবে? বাইবেলে যখন এই সমস্যা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, ডাইনোসাররা হয়ত সেই বন্যায় মারা গেছে যা কিনা নাটকীয় প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ফলে হয়েছিল এবং আসল ঘটনা হল মানুষেরা কঠোরভাবে শিকারের মাধ্যেমে তাদের মেরে ফেলে৷

বাইবেলে ডাইনোসার সম্পর্কে কি বলা আছে? বাইবেলে কি ডাইনোসারের অস্তিত্ব আছে?    

গৃহপালিত পশুরা কি স্বর্গে যেতে পারে? গৃহপালিত পশুদের কি আত্মা আছে?



প্রশ্ন: গৃহপালিত পশুরা কি স্বর্গে যেতে পারে? গৃহপালিত পশুদের কি আত্মা আছে?

উত্তর:
বাইবেলে স্পষ্টভাবে কিছু বলা নেই যে পশুদের “আত্মা” আছে কি নেই এবং তারা স্বর্গ পৌঁছাতে পারবে কিনা৷ যদিও, আমরা বাইবেলের কিছু সাধারণ নীতির দ্বারা এই বিষয়ের ওপর স্পষ্টকরে মতামত দিতে পারি৷ বাইবেলে বলা আছে যে মানুষ (জেনেসিস্ 2:7) এবং পশু উভয়েরই (জেনেসিস্ 1:30; 6:17; 7:15, 22) জীবন রয়েছে৷ মানুষ এবং পশুর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল যে মানুষ তৈরি হয়েছে ঈশ্বরের প্রতিচ্ছবি হিসেবে (জেনেসিস্ 1:26-27), কিন্তু পশুদের গঠন সেরকম নয় ৷ ঈশ্বরের প্রতিচ্ছবি এবং ঈশ্বরের মত গঠনের অর্থ হল যে ঈশ্বরের মত মানুষও আধ্যাত্মিকতা অর্জনে সক্ষম, তাদেরও মন, আবেগ, এবং ঈচ্ছাশক্তি আছে, এবং তারাও মৃত্যুর পরে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারে৷ যদি পশুদের “আত্মা” থাকে অথবা অজাগতিক দিক থাকে, তবে তা নিশ্চয়ই আলাদা এবং নিম্ন “মানের” হবে৷ এই পার্থক্য থেকে বোঝা যায় যে পশুদের “আত্মা”র মৃত্যুর পর আর কোনো অস্তিত্ব থাকে না৷

আরেকটি বিবেচনার বিষয় হল জেনেসিসে পশুরাও ঈশ্বরের সৃষ্টির অংশ৷ ঈশ্বর পশুদের সৃষ্টি করেছেন এবং বলেছেন যে তারা ভাল (জেনেসিস্ 1:25)৷ তাই, নতুন পৃথিবীতে পশুদের না থাকার কোনো কারন নেই (রিভিলেশান 21:1)৷ শতাব্দীর রাজত্বে অবশ্যই পশুরাও থাকবে (ইশা 11:6 ; 65:25)৷ এই বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা খুবই কঠিণ যে এই পশুদের মধ্যে এমন পশুরাও রয়েছে যেগুলি পৃথিবীতে আমাদেরই পোষ্য ছিল৷ আমরা জানি যে ঈশ্বরই সর্বশক্তিমান এবং যখন আমরা স্বর্গে যাব তখন যাই হোক না কেন আমরা এই বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্তের সাথে নিজেদের সম্পূর্ণ যোগোযোগ বুঝতে পারবো৷

গৃহপালিত পশুরা কি স্বর্গে যেতে পারে? গৃহপালিত পশুদের কি আত্মা আছে?    

কেইনের স্ত্রী কে ছিলেন? কেইনের স্ত্রী কি তার বোন ছিলেন?



প্রশ্ন: কেইনের স্ত্রী কে ছিলেন? কেইনের স্ত্রী কি তার বোন ছিলেন?

উত্তর:
বাইবেলে নির্দিষ্ট করে বলা নেই যে কেইনের স্ত্রী কে ছিলেন৷ একমাত্র সম্ভাব্য উত্তর হল কেইনের স্ত্রী ছিলেন তাঁর বোন অথবা ভাগ্নী অথবা প্রভাগ্নী, ইত্যাদি৷ বাইবেলে বলা নেই যে কেইন যখন অ্যাবেলকে হত্যা করেন তখন কেইনের বয়ষ কত ছিল (জেনেসিস্ 4:8)৷ যেহেতু তারা উভয়েই চাষী ছিল, তারা হয়ত দুইজনের প্রাপ্তবয়স্ক ছিল, এবং হয়ত বা তাদের পরিবারের সাথে বাস করত৷ যখন অ্যাবেলকে হত্যা করা হয় তখন অ্যাবেল এবং কেইন ছাড়াও হয়ত আদম এবং ইভের অনেক সন্তান হয়েছিল৷ তাঁদের হয়ত পরেও অনেক সন্তান হয়েছিল (জেনেসিস্ 5:4)৷ আসল ঘটনা হল কেইন অ্যাবেলকে হত্যা করার পর নিজের জীবন নিয়ে ভয় পেয়েছিল (জেনেসিস্ 4:14) যা নির্দেশ করে যে সেইসময় আদম এবং ইভের অনেক ছেলে-মেয়ে এবং নাতি-নাতনি বেঁচেছিল৷ কেইনের স্ত্রী ছিলেন (জেনেসিস্ 4:17) আদম এবং ইভের নাতনি৷

যেহেতু আদম এবং ইভ হলেন প্রথম (এবং একমাত্র) মানুষ, তাঁদের সন্তানদের নিজেদের মধ্যে বিবাহ করা ছাড়া নিশ্চই আর কোনো পথ ছিল না৷ যতদিন পর্যন্ত পৃথিবীতে অনেক লোকের সৃষ্টি হয়েছে এবং একই পরিবারে বিবাহ করা অপ্রয়োজনীয় ছিল না ততদিন ঈশ্বরও একই পরিবারের মধ্যে বিবাহের প্রথাকে নিষেধ করেন নি (লেভিটিকাস্ 18:6-18)৷ আজকের দিনে যে প্রায়শই জিনঘটিত অসঙ্গতি সেইসব শিশুদের মধ্যে দেখা যায় তার কারন দুজন মানুষ যখন একই জিন থেকে সৃষ্টি হয় (অর্থাত্, ভাই এবং বোন) তাদের মধ্যে যৌন আচারের ফলে এই শিশুদের সৃষ্টি, তাদের আচরণে কতৃত্বের ভাব বেশী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ যখন দুজন আলাদা পরিবারের মানুষ সন্তান লাভ করে তখন এর সম্ভাবনা খুব কম থাকবে যে পিতা এবং মাতা দুজনেই একই প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য ধারণ করবে৷ মানুষের জিনঘটিত সংকেত প্রচুর পরিমানে “দূষিত” হয়েছে যুগের পর যুগ ধরে, আর তার কারনেই জিনঘটিত ত্রুটি বৃদ্ধি পেয়েছে, সম্প্রসারিত হয়েছে এবং এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়েছে৷ আদম এবং ইভের কোনো জিনঘটিত ত্রুটি ছিল না, আর তার কারনেই আমাদের শারিরীক সক্ষমতার চেয়ে তাঁদের এবং পরবর্তী কয়েকটি প্রজন্মের শারিরীক ক্ষমতা অনেক বেশী ছিল৷ যদি থেকেও থাকে তবে আদম এবং ইভের সন্তানদের খুব কম জিনঘটিত ত্রুটি ছিল৷ তার ফলেই, তাদের একই পরিবারের মধ্যে বিবাহ করা সুরক্ষিত ছিল৷

কেইনের স্ত্রী কে ছিলেন? কেইনের স্ত্রী কি তার বোন ছিলেন?    

বাইবেলে সমকামীতার বিষয়ে কি বলা আছে ? সমকামীতা কি পাপ?



প্রশ্ন: বাইবেলে সমকামীতার বিষয়ে কি বলা আছে ? সমকামীতা কি পাপ?

উত্তর:
বাইবেল আমাদের দৃঢ়ভাবে বলে যে সমকামীতা পাপ (জেনেসিস্ 19:1-13; লেভিটিকাস্ 18:22; রোমান্‍স 1:26-27; 1 কোরিন্থিয়ান্‍স 6:9)৷ রোমান্‍স 1:26-27 নির্দিষ্টভাবে আমাদের শেখায় যে সমকামীতা হল ঈশ্বরকে অমান্য এবং অস্বীকার করার ফল৷ মানুষ যখন পাপ এবং অবিশ্বাসের পথে চলে তখন ঈশ্বর “আরো সুযোগ দেন” তাদের দুর্নীতিপরায়ণ ও কলুসিত হতে কারণ তার মাধ্যমেই মানুষ বুঝতে পারবে যে ঈশ্বরকে ছাড়া যে জীবন তা কতখানি ব্যর্থ এবং নৈরাশ্যজনক৷ 1 কোরিন্থিয়ান্‍স 6:9 দাবী করে যে যারা সমকামীতা করে সেই “পাপীরা” ঈশ্বরের রাজত্বে প্রবেশের অধিকার পায় না৷

ঈশ্বর কোনো মানুষকে সমকামী করে সৃষ্টি করেননি৷ বাইবেলে বলা আছে যে পাপের কারণের মানুষ পরে সমকামীতে পরিণত হয়েছে (রোমান্‍স 1:24-27) এবং আসলে নিজেদের ইচ্ছার কারণে৷ কোনো কোনো মানুষ যেমন হিংস্রতা এবং পাপের প্রবৃত্তি নিয়েই জন্মগ্রহণ করে তেমনি কোনো মানুষ হয়ত সমকামীতার প্রবণতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে৷ তার জন্য কোনো ব্যক্তি যদি এই পাপ করার ইচ্ছা থেকে এই পথ বেছে নেয় তবে তা সঠিক নয়৷ যদি কোনো ব্যক্তি অতিরিক্ত ক্রোধ/উন্মাদনার প্রবণতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, তবে সেই সকল আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা কি যুক্তিসম্মত? অবশ্যই নয়৷ সমকামীতার ক্ষেত্রেও একই নীতি প্রযোজ্য৷

যদিও, বাইবেল সমকামীতাকে অন্য যে কোনো পাপের চেয়ে “মহত্তর” বলে বর্ণনা করেনি৷ সকল পাপই ঈশ্বরের কাছে অন্যায়৷ সমকামীতাও 1 কোরিন্থিয়ান্‍স 6:9-10-এর তালিকাভুক্ত সেরকম একটি পাপ যা মানুষকে ইশ্বরের রাজত্বে প্রবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে৷ বাইবেল অনুযায়ী, একজন ব্যভিচারী, মূর্তি পূজারী, খুনী, চোর ইত্যাদি ব্যক্তি যেভাবে ঈশ্বরের ক্ষমাশীলতার আশীর্ব্বাদ পায় সমকামীও সেইভাবেই পাবে৷ যে সকল ব্যক্তিরা নিজেদের মুক্তির পথ হিসেবে প্রভূ যীশু খ্রীষ্টকেই বিশ্বাস করে তাদের সকলের মত সমকামীদেরও ঈশ্বর পাপের ওপর জয়ের শক্তি অর্জন করার শক্তি প্রদান করেন (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 6:11; কোরিন্থিয়ান্‍স 5:17; ফিলিপিয়ান্‍স 4:13)৷

বাইবেলে সমকামীতার বিষয়ে কি বলা আছে ? সমকামীতা কি পাপ?    

হস্তমৈথুন – এটি কি বাইবেল অনুযায়ী পাপ?



প্রশ্ন: হস্তমৈথুন – এটি কি বাইবেল অনুযায়ী পাপ?

উত্তর:
বাইবেলে স্পষ্টভাবে কিছু বলা নেই যে হস্তমৈথুন করা বা হস্তমৈথুন না করা পাপ কিনা৷ এই ধর্মগ্রন্থের জেনেসিস্ 38:9-10-এর ওনান এর গল্পে হস্তমৈথুন সম্পর্কে নির্দেশ করা হয়েছে৷ কেউ কেউ এই অনুচ্ছেদের বর্ণনায় বলে যে মাটিতে “তোমার শুক্র ছড়ানো” পাপ৷ যদিও, অনুচ্ছেদে নির্দিষ্টকরে এটিই বলা নেই৷ ঈশ্বর ওনানকে “তার শুক্র ছড়ানো”র জন্য শাস্তি দেননি, বরং শাস্তি দিয়েছিলেন কারন ওনান তার ভাইকে উত্তরাধিকার দেওয়ার কর্তব্য পালন করেনি৷ এই অনুচ্ছেদটি হস্তমৈথুন বিষয়ে ছিল না, বরং ছিল পারিবারিক কর্তব্য পালন করার বিষয়ে৷ ম্যাথিউ 5:27-30-র দ্বিতীয় অনুচ্ছেদটি কখনো কখনো হস্তমৈথুনকে পাপ হিসেবে প্রমান করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে৷ যীশু কামনাজনিত চিন্তার বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন এবং বলেছেন, “যদি তোমার ডান হাত পাপের কারন হয়, তবে তা কেটে ফেলে দাও৷” “যদিও এই অনুচ্ছেদ এবং হস্তমৈথুন সমান্তরাল, তবে এটা বোঝা যায় না যে প্রভূ যীশু এখানে পরোক্ষভাবে হস্তমৈথুনকেই উল্লেখ করতে চেয়েছেন৷”

যেহেতু বাইবেলের কোথাও নির্দিষ্টভাবে বলা নেই যে হস্তমৈথুন পাপ, তাই এটা নিয়ে কোনো প্রশ্নই নেই যে হস্তমৈথুনের জন্য যে ক্রিয়া করা হয় তা পাপ৷ হস্তমৈথুন হল কামজনিত চিন্তার ফল, যৌঁন উত্সেচক, এবং/অথবা অশ্লীল চিত্রের প্রতিচ্ছবি৷ এই সমস্যার সাথে মোকাবিলা করা উচিত৷ যদি কামনাজনিত পাপ, অনৈতিক চিন্তা এবং অশ্লীলতা ত্যাগ করা এবং কাটিয়ে ওঠা যায়, তবে হস্তমৈথুন কোনো সমস্যাই নয়৷ অনেক মানুষ হস্তমৈথুনের জন্য অপরাধ বোধে ভোগে, কিন্তু বাস্তবে, যে কারনগুলির জন্য এই কাজ সেগুলির জন্যই অনুশোচনা হওয়া উচিত৷

কিছু বাইবেল সম্বন্ধীয় নীতি আছে যেগুলি হস্তমৈথুনের সমস্যার জন্য প্রয়োগ করা যেতে পারে৷ এফেসিয়ানস্ 5:3 ঘোষণা করেছে, “তোমার মধ্যে যৌনমূলক অনৈতিকতার চিহ্ন বা কোনো রকমের অশুচিতা থাকা উচিত নয়৷” কিভাবে হস্তমৈথুন সেই পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয় তা দেখা কঠিণ৷ বাইবেল আমাদের শেখায়, “তুমি খাও বা পান কর বা আর যাই কর না কেন, তা করা উচিত ঈশ্বরের করুণা লাভের জন্য” (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 10:31)৷ তুমি যদি কিছুর জন্য ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করতে না পার তবে তা করা উচিত নয়৷ একজন ব্যক্তি যদি সম্পূ্র্ণভাবে নিশ্চিত না হয় যে কোনো কাজ ঈশ্বরকে খুশী করছে কিনা তবে সেটাই পাপ : “যা কিছু বিশ্বাস থেকে আসে না তাই পাপ” (রোমানস্ 14:23)৷ আবার, আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমাদের দেহ ঈশ্বরের সম্পদ৷ “তুমি কি জান না যে তোমার দেহ হল পবিত্র আত্মার মন্দিরের মত, যিনি তোমার মধ্যে অবস্থান করেন, যাঁকে তুমি ঈশ্বরের কাছ থেকে পেয়েছ? তুমি তোমার নিজের নও; তোমার সৃষ্টির জন্য মূল্য দেওয়া হয়েছে৷ তাই ঈশ্বরকে তোমার দেহের দ্বারা সম্মান কর” (1 কোরিন্থিয়ান্‍স 6:19-20)৷ এই মহান সত্যের একটি বাহক হল যে আমরা আমাদের দেহ দিয়ে কি করি৷ এই নীতিগুলির আলোতে, এই উপসংহারে পৌঁছানো যায় যে, বাইবেল অনুযায়ী হস্তমৈথুন হল পাপ৷ স্পষ্টভাবে, হস্তমৈথুন ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করে না; এটি অনৈতিকতার উপস্থিতিকে পরিত্যাগ করে না, এমনকি এটি আমাদের দেহের ওপর ঈশ্বরের অধিকারকে স্থাপন করে না৷

হস্তমৈথুন – এটি কি বাইবেল অনুযায়ী পাপ?