ধর্মধামে পিতর ও যোহন।
১ য্খন পিতর এবং যোহন লোকেদের কাছে কথা বলছিলেন ঠিক সেসময়ে যাজকেরা ও ধর্মধামের সেনাপতি এবং সদ্দূকীরা তাড়াতাড়ি তাদের কাছে এসে হাজির হলেন। ২ তারা গভীর সমস্যায় পড়েছিল কারণ তারা লোকেদের উপদেশ দিতেন এবং যিশু যে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থান হয়েছেন তা প্রচার করতেন। ৩ আর তারা তাদেরকে ধরে পরের দিন পর্যন্ত আটকে রেখেছিলেন, ৪ কারণ তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল, তবুও যারা কথা শুনছিল তাদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করেছিল, তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা কমবেশি পাঁচ হাজার মতো ছিল। ৫ পরের দিন লোকেদের শাসকেরা, প্রাচীনেরা ও শিক্ষা গুরুরা যিরুশালেমে সমেবেত হয়েছিলেন, ৬ এবং হানন মহাযাজক, কায়াফা, যোহন, আলেকসান্দর, আর মহাযাজকের নিজের লোকেরা উপস্থিত ছিলেন। ৭ তারা তাদেরকে মধ্যিখানে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কি ক্ষমতায় বা কার নামে তোমরা এই কাজ করেছ? ৮ তখন পিতর পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাদেরকে বলেছিলেন হে লোকেদের শাসকেরা ও প্রাচীনবর্গ, ৯ একটি দুর্বল মানুষের উপকার করার জন্য যদি আজ আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয় কিভাবে এই লোকটি সুস্থ হয়েছে, ১০ তবে আপনারা সকলে ও সমস্ত ইস্রায়েলবাসী এই জানুক যে, নাসরতীয় যীশু খ্রীষ্টের নামে যাকে আপনারা ক্রুশে দিয়েছিলেন, যাকে ঈশ্বর মৃতদের মধ্য থেকে উঠিয়েছিলেন, তাঁরই গুনে এই ব্যক্তি আপনাদের কাছে সুস্থ শরীরে দাঁড়িয়ে আছে। ১১ তিনি সেই পাথর যেটি গাঁথকেরা যে আপনারা আপনাদের দ্বারাই অবহেলিত হয়েছিল, যা কোন প্রধান প্রস্তর হয়ে উঠেছে। ১২ আর অন্য কারোও কাছে পরিত্রাণ নেই, কারণ আকাশের নীচে ও মানুষদের মধ্যে দত্ত এমন আর কোনোও নাম নেই যে নামে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি। ১৩ সেসময় পিতর ও যোহনের সাহস দেখে এবং এরা যে অশিক্ষিত সাধারণ লোক এটা দেখে তারা অবাক হয়েছিলেন এবং চিনতে পারলেন যে এঁরা যীশুর সঙ্গে ছিলেন। ১৪ আর ঐ সুস্থ ব্যক্তিটি তাঁদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে দেখে তারা তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারলো না। ১৫ কিন্তু তারা প্রেরিতদের সভা কক্ষ থেকে বাইরে যেতে আজ্ঞা দিলেন এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকলো ১৬ যে এই লোকেদের নিয়ে কি করা যায়? কারণ তারা যে অলৌকিক কাজ করেছিল তা যিরূশালেমের লোকেরা জেনে গিয়েছিল; আমরা তা অস্বীকার করতে পারি না। ১৭ কিন্তু এই কথা যেন লোকেদের মধ্যে না ছড়ায়, তাই তারা এদের ভয় দেখিয়ে বলল তারা যেন এই নামে কাউকে কিছু না বলে। ১৮ তাই তারা পিতর এবং যোহনকে ভিতরে ডাকলো এবং তাঁদের নির্দেশ করলো কাউকে যেন কিছু না বলে এবং যীশুর নামে শিক্ষা না দেয়। ১৯ পিতর ও যোহন উত্তর দিয়ে তাদের বললেন,” ঈশ্বরের কথা ছেড়ে আপনাদের কথা শুনা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে উচিত কিনা আপনারা বিচার করুন। ২০ কিন্তু আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি তা না বলে থাকতে পারিনা” ২১ পরে তারা পিতর ও যোহনকে আরোও ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দিলেন। কারণ লোকের ভয়ে তাঁদের শাস্তি দেবার পেল না কারণ যা করা হয়েছিল তার জন্য সমস্ত লোক ঈশ্বরের গৌরব করছিল ২২ যে ব্যক্তি এই অলৌকিক কাজের দ্বারা সুস্থ হয়েছিল তিনি কমবেশ চল্লিশ বছরের উপরে ছিলেন।
বিশ্বাসীদের প্রার্থনা।
২৩ তাদের ছেড়ে দেওয়ার পর তারা নিজেদের সঙ্গীদের কাছে গেলেন এবং প্রধান যাজক ও প্রাচীনরা তাদের যে কথা বলেছিল তা তাদের জানালেন। ২৪ যখন তারা একথা শুনেছিল তারা একসঙ্গে উচ্চস্বরে ঈশ্বরের জন্য বলেছিল, প্রভু তুমি যিনি আকাশমণ্ডল, পৃথিবী, সমুদ্র এবং তার মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা। ২৫ তুমি তোমার দাস আমাদের পিতা দাউদের মুখ থেকে পবিত্র আত্মার দ্বারা কথা বলেছ 'যেমন অযিহূদীরা কেন কলহ করল? লোকেরা কেন অনর্থক বিষয়ে ধ্যান করল? ২৬ পৃথিবীর রাজারা একসঙ্গে দাঁড়ালো, শাসকেরা একসঙ্গে জমায়েত হলো প্রভুর বিরুদ্ধে এবং তাঁর অভিষিক্ত খ্রীষ্টের বিরুদ্ধে; ২৭ কারণ সত্যি যীশু যিনি তোমার পবিত্র দাস যাকে তুমি অভিষিক্ত করেছ, তাঁর বিরুদ্ধে হেরোদ ও পন্তীয় পীলাত অযিহূদীদেরও এবং ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে মিলিত হয়েছিল, ২৮ যেন তোমার হাতের ও তোমার জ্ঞানের দ্বারা আগে যে সমস্ত বিষয় ঠিক করা হয়েছিল তা সম্পন্ন করে। ২৯ আর এখন হে প্রভু তাদের ভয় প্রদর্শনের প্রতি দেখো; এবং তোমার এই দাসেদের দৃঢ় সাহসের সঙ্গে তোমার কথা বলার শক্তি দাও, রোগ ভালো হয় তাই আশীর্বাদ করো; ৩০ আর তোমার পবিত্র দাস যীশুর নামে যেন চিহ্ন ও আর্শ্চয্য কাজ সম্পূর্ণ হয়। ৩১ তারা যে স্থানে একত্র হয়ে প্রার্থনা করেছিলেন সেই মুহূর্তে সেই জায়গায় কেঁপে উঠেছিল এবং তাঁরা সকলে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হলেন ও সাহসের সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করতে থাকলেন।
শিষ্যদের প্রেম, প্রেরিতদের ক্ষমতা ও সাহস।
৩২ আর যে বহুলোক যারা বিশ্বাস করেছিল, তারা এক হৃদয় ও এক প্রাণের বিশ্বাসী ছিল; তাদের একজনও নিজের সম্পত্তির মধ্যে কিছুই নিজের বলত না, কিন্তু তাদের সব কিছু সর্ব সাধারণের থাকত। ৩৩ আর প্রেরিতরা খুব ক্ষমতার সঙ্গে প্রভু যীশুর পুনরুত্থান বিষয়ে সাক্ষ্য দিতেন এবং তাদের সকলের ওপরে মহা অনুগ্রহ ছিল। ৩৪ এমনকি তাদের মধ্যে কেউই গরিব ছিল না; কারণ যারা জমির অথবা ঘর বাড়ির অধিকারী ছিল, তারা তা বিক্রি করে সম্পত্তির টাকা আনতো ৩৫ এবং তারা প্রেরিতদের পায়ের কাছে রাখতো, পরে যার যেমন দরকার তাকে তেমন দেওয়া হত। ৩৬ আর যোষেফ যাকে প্রেরিতরা বার্ণবা নাম দিয়েছিলেন অনুবাদ করলে এই নামের মানে উৎসাহদাতা যিনি লেবীয় ও জাতিতে কুপ্রীয়, ৩৭ তার এক টুকরো জমি ছিল, তিনি তা বিক্রি করে তার টাকা এনে প্রেরিতদের চরণে রাখলেন।