পরমগীত 
গ্রন্থস্বত্ব 
পরমগীত বলে যে নামটি পাই তা পুস্তকটির প্রথম পদ থেকে গৃহীত হয়, যা উল্লেখ করে কার থেকে গীতগুলো এসেছে: গীত সমূহের গীত, যা শলোমনের হচ্ছে (1:1) পুস্তকটির নাম অবশেষে রাজা শলোমনের নামের ওপরে নেওয়া হলো কারণ পুরো পুস্তকটির মধ্য দিয়ে তার নামের উল্লেখ করা হয়েছে। 
রচনার সময় এবং স্থান 
আনুমাণিক 971 থেকে 965 খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়। 
শলোমন ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে তার রাজত্বের দিনের পুস্তকটি লিখেছিলেন, পন্ডিতগণ যারা শলোমনের গ্রন্থস্বত্ব কে ধারণ করে তারা ইচ্ছা প্রকাশ করতে সম্মত হয় যে গীত তার রাজত্বের প্রথম দিকে লেখা হয়েছিল, তা কেবলমাত্র তা কবিতার তরুণ উচ্ছাসের কারণে নয় বরং আবারও সেই কারণে যে গ্রন্থকার স্থান সমূহের নাম উল্লেখ করেছিলেন দেশের উত্তর এবং দক্ষিন উভয় দিকের, লিবানোন এবং মিশর সহ। 
গ্রাহক 
বিবাহিত দম্পতি এবং অবিবাহিতগণ যারা বিবাহের জন্য মন স্থির করেছে। 
উদ্দেশ্য 
পরমগীত একটি সুরেলী কবিতা হচ্ছে যা লেখা হয়েছিল প্রেমের মূল্যকে অত্যন্ত প্রশংসা করে এবং এটা বিবাহকে স্পষ্টভাবে ঈশ্বরের পরিকল্পনা রূপে উপস্থাপন করে। বিবাহের পরিপ্রেক্ষিতে একজন পুরুষ ও স্ত্রীকে একসাথে বসবাস করতে হয়, একে অপরকে প্রেম করতে হয় আত্মিকভাবে, আবেগের সাথে, এবং শারীরিকভাবে। 
বিষয় 
প্রেম এবং বিবাহ 
রূপরেখা 
1. বধূ সলোমনের জন্য চিন্তা করে — 1:1-3:5 
2. বধূর বিবাহের বাগদানের স্বীকার এবং বিবাহের দিকে লক্ষ্য রাখে — 3:6-5:1 
3. বধূ বরকে হারাবার স্বপ্ন দেখে — 5:2-6:3 
4. বধূ এবং বর একে অপরের প্রশংসা করে — 6:4-8:14  
 1
 1 পরমগীত; এটি শলোমনের। 
প্রিয়তম। 
 2 তিনি তাঁর মুখের চুম্বনে আমাকে চুম্বন করুন, 
কারণ তোমার ভালবাসা আঙ্গুরের রসের থেকেও ভাল। 
 3 তোমার অভিষেকের সুগন্ধি তেলের সৌরভ আনন্দদায়ক 
এবং তোমার নাম বহমান সুগন্ধির মতো আনন্দদায়ক হবে। 
সেই জন্যই তো কুমারী মেয়েরা তোমাকে ভালবাসে। 
বন্ধুদের প্রিয়তম। 
 4 “আমাকে তোমার সঙ্গে নাও এবং আমরা একসঙ্গে যাব।” 
রাজা আমাকে তাঁর নিজের ঘরে নিয়ে গেলেন। 
আমরা খুশি ও তোমাতে আনন্দিত; 
আমরা তোমার ভালোবাসাকে আঙ্গুর রসের থেকেও বেশি প্রশংসা করব। 
তারা ঠিক কারণেই তোমাকে ভালবাসে। 
 5 ওহে যিরূশালেমের মেয়েরা, 
আমি কালো হলেও সুন্দরী, তাঁবুর মত, 
শলোমনের পর্দার মত। 
 6 আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে দেখো না 
যে আমি কতটা কালো, 
কারণ সূর্য্য আমার রং কালো করেছে। 
আমার নিজের ভাইয়েরা আমার উপরে রেগে গেল 
এবং আমাকে আঙ্গুর ক্ষেতের রক্ষী করেছে, 
সেইজন্য আমার নিজের আঙ্গুর ক্ষেত রক্ষা করি নি। 
 7 আমার প্রাণ তুমি যাকে ভালবাস, 
তুমি বলো হে আমার প্রিয়তম, আমাকে বল, 
তুমি কোথায় তোমার ভেড়ার পাল চরাও? 
তোমার ভেড়াগুলিকে দুপুরের দিন কোথায় বিশ্রাম করাও? 
আমি কেন তার মত হব যে তোমার সঙ্গী 
রাখালদের ভেড়ার পালের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখে? 
বন্ধুরা। 
 8 হে নারীদের সেরা সুন্দরী, 
তুমি যদি না জান তবে ভেড়ার পালের 
পায়ের চিহ্ন ধরে অনুসরণ করো, 
পালকদের তাঁবু গুলোর কাছে 
তোমার সব ছাগলের বাচ্চাগুলো চরাও। 
প্রেমিকা। 
 9 হে আমার প্রিয়তমা, আমি ফরৌণের রথের 
এক স্ত্রী ঘোড়ার সঙ্গে তোমাকে তুলনা করেছি। 
 10 তোমার গালদুটি অলঙ্কারের সঙ্গে, 
তোমার গলা হারের সঙ্গে সুন্দর দেখাচ্ছে। 
 11 আমরা তোমার জন্য রূপা দিয়ে কাজ করা 
সোনার কানের দুল তৈরী করব। 
প্রিয়তম। 
 12 রাজা যখন তাঁর ভোজনে * বিছানায় বসলেন বসলেন 
তখন আমার সুগন্ধি দ্রব্য সৌরভ ছড়াতে লাগল। 
 13 আমার প্রিয় আমার কাছে যেন 
গন্ধরস রাখার ছোট এক থলির মত 
যা আমার বুকের মাঝখানে থাকে। 
 14 আমার প্রিয় আমার কাছে এক গোছা মেহেন্দী ফুলের মত, 
যা ঐন্গদীর আঙ্গুর ক্ষেতে জন্মায়। 
প্রেমিক। 
 15 দেখো, আমার প্রিয়, তুমি কত সুন্দরী! দেখো, 
তুমি সুন্দরী। তোমার চোখ দুটি ঘুঘুর মত। 
প্রিয়তম। 
 16 প্রিয় তাঁর প্রিয়কে বললেন, 
কি সুন্দর তুমি! হ্যাঁ, তুমি খুবই সুন্দর। 
আমাদের বিছানা সবুজ বর্ণের হবে। 
প্রেমিক। 
 17 এরস গাছের দল আমাদের বাড়ির কড়িকাঠ, 
আর দেবদারু গাছের ডাল আমাদের ঘরের ছাদের বীম।